যেকোনো আমল নিয়মিত করা ছিল প্রিয় নবী (সা.)-এর পছন্দের শীর্ষে। হজরত মাসরুক বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবীজি (সা.)-এর কাছে কোন আমল সবচেয়ে প্রিয় ও পছন্দনীয় ছিল? তিনি বললেন, ‘নিয়মিত আমল’ (বুখারি ৬৪৬১)।
আল্লাহ তায়ালার কাছেও তা সর্বাধিক প্রিয়। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আল্লাহর কাছে কোন আমল সর্বাধিক প্রিয়?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘যে আমল সর্বদা করা হয় চাই তা কম হোক’ (বুখারি : ৬৪৬৫)।
আরেক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা সত্যের ওপর অবিচল থাকো, মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো এবং সুসংবাদ গ্রহণ করো। কেননা কাউকে তার আমল জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে না। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বললেন, আপনাকেও না? বললেন, না, আমাকেও আমল জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, আল্লাহ তায়ালা আমাকে আপন রহমত দ্বারা পরিবেষ্টন করবেন। মনে রেখো, আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে পছন্দের আমল হলো যা নিয়মিত করা হয় যদিও তা পরিমাণে হয় অল্প।’ (মুসলিম : ২৮১৮)
পক্ষান্তরে অনুকূল-প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে পরিবর্তনশীল অনিয়মিত আমল আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের অপছন্দনীয়। অবস্থা ও পরিস্থিতির শিকার হয়ে যারা আমল গ্রহণ করে কিংবা বর্জন করে তাদের নিন্দা করে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘কিছু মানুষ আছে, যারা প্রান্তিকভাবে ইবাদত করে, কল্যাণপ্রাপ্ত হলে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে আর বিপদগ্রস্ত হলে মুখ ফিরিয়ে নেয়। তারা দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতে ক্ষতিগ্রস্ত। আর এটাই হলো বড় ক্ষতিগ্রস্ততা’ (সুরা হজ : ১১)।
অন্যত্র বলেন, ‘যখন মানুষের প্রতি আমি কোনো অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং পাশর্^ পরিবর্তন করে দূরে সরে যায়। আবার যখন তাকে কোনো অমঙ্গল স্পর্শ করে তখন সে বনে যায় লম্বা-চওড়া দোয়া প্রার্থনাকারী।’ (সুরা হা-মিম সাজদা : ৫১)
যারা নিয়মিত নেক আমল করে এবং মৃত্যু পর্যন্ত নেক আমলের ওপর অবিচল থাকে তাদের জন্য পবিত্র কুরআনে বড় সুসংবাদ এসেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা বলেছে, আমাদের রব আল্লাহ! তারপর তারা তাতে থাকে অবিচল, নিশ্চয়ই তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হবে (এবং বলবে) যে, তোমরা কোনো ভয় কোরো না এবং কোনো কিছুর জন্য চিন্তিত হয়ো না আর আনন্দিত হয়ে যাও সেই জান্নাতের জন্য, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেওয়া হতো।’ (সুরা হা-মীম সাজদা : ৩০)