ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

‘আলু-শাক কিনতেই টাকা শ্যাষ, মাছ-মাংস কতি পামু’

‘মাটির হাঁড়ি-পাতিল কেনার লোকের এখন খুঁজ মিলে না। সবার বাড়িত এলা কারেন্টের জিনিস। আগের মতোন এলা আর বিক্রি হয় না। আগুত (আগে) সারা দিন গ্রামে-গ্রামে ঘুরি ভালো টাকা বিক্রি করিছু। এলা (এখন) তো ৫০০ টাকা দিনে বিক্রি করিবা পারুনা। এমনি বেচাকেনা নাই, তারপর যে জিনিসপত্রের দাম হাত দিবা পারুনা। আইজকা যা লাভ হইল, তা দিয়া আলু আর শাক কিনিতে সব চলি গেল। মাছ-মাংস কিনিলে পুঁজি শেষ হইয়া যাইব।’ 

সারা দিন ভ্যান চালিয়ে গ্রামে-গ্রামে ঘুরে মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করেন বৃদ্ধ আলো পাল (৬১)। বাড়ি ফেরার পথে তার সঙ্গে দেখা হলে বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলো পাল। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করে আসছেন তিনি। তবে আগের মতো বিক্রি না হওয়া এবং দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

আলো পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, যুদ্ধ যে হইল সেলা মোর বয়স ছিল সাড়ে আট বছর। যুদ্ধের আগুত বাপসহ সবাই ঠাকুরগাঁও চলে আসি। মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করা হামার বাপ-দাদার পেশা। এলাও ওই কাজ করেই সংসার চালাছি। ভাড়ত করিয়া মাটি আনা, তারপর পুড়াসহ গ্রামত ঘুরে বিক্রি করিবা লাগে। আগুত সারা দিনে বাহির হইলে ভালোই বেচা যাইতো। আর চাহিদাও ছিল মানুষের বেশি। এখন আর আগের মতোন মাটির হাঁড়ি পাতিলের চাহিদা নেই।

তিনি আরও বলেন, মানুষ এলা ডিজিটাল হই গেছে। ছুয়াডাক (ছেলে) কহিচু এইলা কাম করা যাবেনি। সংসার চালাবার পারিবনি। আবার এলা জিনিসের দাম। যেইখানে দাম ছিল দশ টাকা ওইখান এলা পনেরো টাকা। আইজকা যা লাভ করিনু, আলু, শাক আর মুলা কিনিতেই শেষ হইয়া গেল। এ রকম করেই জীবন চালাবা হবে হামাক।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

‘আলু-শাক কিনতেই টাকা শ্যাষ, মাছ-মাংস কতি পামু’

আপডেট সময় ১২:৩৩:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২

‘মাটির হাঁড়ি-পাতিল কেনার লোকের এখন খুঁজ মিলে না। সবার বাড়িত এলা কারেন্টের জিনিস। আগের মতোন এলা আর বিক্রি হয় না। আগুত (আগে) সারা দিন গ্রামে-গ্রামে ঘুরি ভালো টাকা বিক্রি করিছু। এলা (এখন) তো ৫০০ টাকা দিনে বিক্রি করিবা পারুনা। এমনি বেচাকেনা নাই, তারপর যে জিনিসপত্রের দাম হাত দিবা পারুনা। আইজকা যা লাভ হইল, তা দিয়া আলু আর শাক কিনিতে সব চলি গেল। মাছ-মাংস কিনিলে পুঁজি শেষ হইয়া যাইব।’ 

সারা দিন ভ্যান চালিয়ে গ্রামে-গ্রামে ঘুরে মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করেন বৃদ্ধ আলো পাল (৬১)। বাড়ি ফেরার পথে তার সঙ্গে দেখা হলে বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলো পাল। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করে আসছেন তিনি। তবে আগের মতো বিক্রি না হওয়া এবং দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির কারণে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

আলো পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, যুদ্ধ যে হইল সেলা মোর বয়স ছিল সাড়ে আট বছর। যুদ্ধের আগুত বাপসহ সবাই ঠাকুরগাঁও চলে আসি। মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করা হামার বাপ-দাদার পেশা। এলাও ওই কাজ করেই সংসার চালাছি। ভাড়ত করিয়া মাটি আনা, তারপর পুড়াসহ গ্রামত ঘুরে বিক্রি করিবা লাগে। আগুত সারা দিনে বাহির হইলে ভালোই বেচা যাইতো। আর চাহিদাও ছিল মানুষের বেশি। এখন আর আগের মতোন মাটির হাঁড়ি পাতিলের চাহিদা নেই।

তিনি আরও বলেন, মানুষ এলা ডিজিটাল হই গেছে। ছুয়াডাক (ছেলে) কহিচু এইলা কাম করা যাবেনি। সংসার চালাবার পারিবনি। আবার এলা জিনিসের দাম। যেইখানে দাম ছিল দশ টাকা ওইখান এলা পনেরো টাকা। আইজকা যা লাভ করিনু, আলু, শাক আর মুলা কিনিতেই শেষ হইয়া গেল। এ রকম করেই জীবন চালাবা হবে হামাক।