ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টে সমাবেশ ও মিছিল না করার বিষয়ে উচ্চ আদালতের আগের দেওয়া রায় অনুসরণ করতে আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদনের শুনানির দিন ঠিক করে বুধবার (৩০ আগস্ট) এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আগামী ১৯ অক্টোবর আদালত অবমাননার আবেদনের পর শুনানির দিন ঠিক করা হয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।
শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আমরা বাংলাদেশের বিচারপতিরা আমরা হলাম শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’- আপিল বিভাগের এক বিচারপতির এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মিছিল-স্লোগান-সভা অব্যাহত রাখায় বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগে এমন আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।
আবেদনে বাদী হয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।
বিবাদী করা হয়েছে আইনজীবী কায়সার কামালসহ সাতজনকে।
পরে এক ব্রিফিংয়ে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আমরা তো কোর্ট অফিসার। কোর্টের ভাবমূর্তি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে কতিপয় আইনজীবীরা বিচারপতিদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের শব্দ বলছেন। যা আদালত অবমাননার শামিল।
গত ১৭ আগস্ট সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ও ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত এক শোক সভায় প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্য বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং ১৬ আগস্ট জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে আজ আমাদের সংবাদ সম্মেলন।
তিনি বলেন,আলোচনা সভায় বিচারপতি এম. এনায়েতুর রহিম ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবীদ হিসেবে বিচারপতিদেরকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি স্পষ্টতই দেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে শাসক দলের নেতাদের মতো রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, ইদানিং সুষ্ঠু নির্বাচন, বিদেশি প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এসব নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে, শুধু ভোট দেওয়াই একমাত্র গণতন্ত্র নয়।
বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে মৌলিক অধিকার জনগণের রয়েছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন সারা পৃথিবীতে নির্বাচন হয় কেউ তাকিয়েও দেখে না, নির্বাচন ঘিরে সব নজর বাংলাদেশের দিকে কেন!
কায়সার কামাল বলেন, বিচারকদের এহেন বক্তব্য কতটুকু বিচারক সুলভ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক তা সহজেই অনুমেয়। তারা বিচারপতির মহত্ত্ব ধারণ করতে পারেন কি না তা জনমনে অনেক সংশয় ও প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে।
এরপর বিভিন্ন সময়ে এই নিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মিছিল-সভা-স্লোগান দিয়ে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপট তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।