ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর শুনানি ১৪ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৯ আগস্ট) প্রথম দিনের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী কায়সার কামাল। তিনি মামলার এজাহার উপস্থাপন করে বলেন, এই মামলার সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী অসুস্থ এবং আজ কোর্টে আসেননি। তিনি শুনানি করবেন, এজন্য সময় প্রয়োজন।
তখন আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এরপর আদালত ১৪ আগস্ট এই মামলার শুনানি শেষ করবেন জানিয়ে শেষ বারের মতো সময় নির্ধারণ করেন।
এর আগে গত ১৭ মে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার পক্ষে এ আবেদন করেন আইনজীবী কায়সার কামাল।
গত ১৯ মার্চ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।
সেদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জানান, তিনি খালেদা জিয়ার পক্ষে হাজিরা দিয়েছেন।
এ সময় বিচারক আসামিদের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ? অন্য আসামিরা নিজে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
বিচার শুরু হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ৷
অপরদিকে আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। সেখান থেকে পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি নিজ বাসায়ই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।