জাতীয় ভারত্তোলন মানেই সাফে স্বর্ণজয়ী মাবিয়া আক্তার সীমান্তর রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। এবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপও ব্যতিক্রম নয়। ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণীতে স্ন্যাচে ৮১ কেজি তুলে নিজেরই করা আগের রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি।
২০১৩ সালের বাংলাদেশ গেমস থেকে মাবিয়া আক্তার সীমান্তের জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণ জয়ের শুরু। এক দশক সেই ধারাই অব্যাহত রয়েছে। আরেকবার নিজের ইভেন্টে সেরা হয়ে তাই একটু প্রতিক্রিয়াহীনই মাবিয়া, ‘আসলে আমার ইভেন্টে আমিই রেকর্ড গড়ছি আবার ভাঙছি। আমার প্রতিদ্বন্দ্বি সেভাবে উঠে আসছে না। আমি যে ওজন তুলছি তা খুব সহসা কেউ ভাঙতে পারবে বলেও মনে হচ্ছে না।’
আজ জাতীয় ভারত্তোলন প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনে নারী ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণীতে সীমান্ত স্ন্যাচে ৮১ এবং ক্লিন এন্ড জার্কে ৯৯ কেজি তুলে মোট ১৮০ কেজি স্কোর করে প্রথম হয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিথী রানী ১৩৬ কেজি স্কোর করে দ্বিতীয় হয়েছেন। সীমান্তের সঙ্গে ব্যবধান যোজন যোজন দূরত্বে।
গত এক দশকে জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনেক পদকই এনেছেন সীমান্ত। এত প্রাপ্তি হওয়ায় নিজের পদক সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে জানেন না দেশ সেরা এই ভারত্তোলক, ‘আসলে আমি আমার পদক সেভাবে গুণি না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব জায়গাতেই সেরা হওয়ার চেষ্টা করি।’
ভারত্তোলনে বয়স ও ওজনের সঙ্গে ইভেন্টও পরিবর্তন হয়। মাবিয়া গত ২০১৪ সাল থেকেই ৬৪ কেজিতে অংশগ্রহণ করছেন। একই ইভেন্ট চালিয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘এই ওজন শ্রেণীতে আমার দীর্ঘদিন খেলা হয়ে যাচ্ছে। এটাতে আমিও সফল হচ্ছি। ফেডারেশন ও দেশের প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাঝে মধ্যে অন্য ওজন শ্রেণীতেও খেলতে হয়। তবে সময়ের প্রয়োজনে আমার এই ইভেন্টও ছাড়তে হবে।’
জাতীয় ভারত্তোলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের সুইমিংপুলের বিপরীত ভবনে। ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থার নিচে একটি কক্ষে ভারত্তোলকরা অনুশীলন করেন। সেই অনুশীলন কক্ষেই গত বছর থেকে জাতীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এত স্বল্প জায়গায় জাতীয় আয়োজন কষ্টসাধ্য। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জিমনিশিয়াম না পাওয়ায় এভাবেই চলছে ভারত্তোলন প্রতিযোগিতা। সামগ্রিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সীমান্ত বলেন, ‘খেলোয়াড়, কোচ, জাজ সবার জন্যই এখানে কাজ করা কষ্ট। এত স্বল্প রুমে এত লোকের সমাগমে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয় ফলে খেলোয়াড়দের মনোযোগে ঘাটতি পড়ে যায়। ফেডারেশন নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে।’
ভারত্তোলন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক আনে নিয়মিতই। সেই ফেডারেশন অনুশীলন এবং খেলার জায়গা পাচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সে অনেক ফেডারেশনের সাফল্য না থাকলেও বড় কমপ্লেক্স ব্যবহার করছে। ফেডারেশনগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সব জেনেও নিশ্চুপ!