ঢাকা ০২:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কে আসল কে নকল বোঝা বড় দায় শুধু নামের মিলে বেরোবির শিক্ষক হয় ইমরান খানের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালানোর শঙ্কা জবির ৯ শিক্ষকসহ ২৫৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা উপ-রাষ্ট্রপতি পদ ফেরাতে চায় বিএনপি, আগে কারা ছিলেন? বঞ্চিত ক্রীড়া সংগঠকদের মাঠে ফিরিয়ে আনতে চাই : আমিনুল হক বিহারী মুরাদ দিদার এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র মঠবাড়িয়ার সাপলেজা ইউনিয়নে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত সংঘাত অস্থিরতার দায় সরকার এড়াতে পারে না: এবি পার্টি ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের’ মাহবুবুলসহ ১৮ জন কারাগারে রংপুর জেলায় বিএসটিআই’র সার্ভিল্যান্স অভিযান পরিচালনা

শিবচরে বসে ৩৫০ কর্মী নিয়ে বিদেশের কাজ করেন সহিদুল

মাদারীপুরের শিবচরে তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে সাজানো–গোছানো কার্যালয়। এটি সিএম ওয়ার্ক সল্যুশনস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে সহিদুল ইসলাম তথ্যপ্রযুক্তির আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন। তাঁর গ্রাহকদের সবাই বিদেশি। ৩৩ বছর বয়সী সহিদুলের একসময় নিজের একটা বাইসাইকেলের শখও পূরণ হয়নি। অথচ নিজের গড়া প্রতিষ্ঠানে এখন ৩৫০ জন কর্মী। সম্প্রতি শিবচরে গিয়ে কথা হয় সহিদুলের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর জীবনের কথা।

বয়স তখন কতই বা হবে, ১২ কি ১৩ বছর। বন্ধুরা বাইসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াত, সহিদুল তখন তাকিয়ে দেখত। কৃষিজীবী বাবার সামর্থ্য ছিল না একটি বাইসাইকেল কিনে দেওয়ার। সহিদুল মনে মনে ভাবত, ‘একদিন আমি নিজের গাড়িই চালাব।’

সহিদুল বলেন, ‘নিজস্ব ভবনে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি, গাড়িও কিনেছি।’

শিবচরের পাশাপাশি সহিদুলের নিজের কার্যালয় রয়েছে ঢাকায়। সপ্তাহে এক দিন আসেন ঢাকায়।

প্রতিকূলতায় বেড়ে ওঠা

কাজের সুবিধার জন্য শিবচরে বসবাস করলেও সহিদুল ইসলামের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পশ্চিম সেনের চরে। কৃষক বাবা আনোয়ার হোসেন চোকদারের কৃষিপণ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসা ছিল। আনোয়ার হোসেনের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সহিদুল। জন্ম ১৯৯০ সালে। জাজিরা মহর আলি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ২০০৬ সালে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন ঢাকায় বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ থেকে। এরপর রাজধানীর ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তিন সেমিস্টারের বেশি পড়াশোনা চালাতে পারেননি।

২০০৭ সালের দিকে বাবা আনোয়ার হোসেন চোকদার ভাগ্য বদলাতে গিয়েছিলেন বিদেশে। সহিদুল বলেন, ‘পাঁচ বছর ভালোই চলছিল। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। পরে বাবা দেশে ফিরে এলে আয় কমে আসে। পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। চাচা–ফুফুদের সাহায্য নিয়ে তিন সেমিস্টার শেষ হয়। ২০১২ সালের দিকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা।’

বিরতির পরে ২০১৭ সালে ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন সহিদুল। এখন তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করছেন। অবশ্য পড়াশোনায় আবার নিয়মিত হওয়ার আগে সহিদুলকে স্বাবলম্বী হতে হয়েছে।

আউটসোর্সিং শুরুর কথা

২০০৮ সাল। উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর সহিদুল তখন আজিমপুরের একটা মেসে থাকেন। চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা। এক বন্ধুর কাছে শুনলেন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের কথা। বিষয়টির প্রতি একধরনের আগ্রহও তৈরি হলো। দিনভর চেষ্টা থাকে এ বিষয়ে জানা–বোঝা। দেশে-বিদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কিছু কাজ দক্ষ কর্মী বা কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়ে করিয়ে নেয়। ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবী হিসেবে কোনো ব্যক্তি এসব কাজ করেন।

সহিদুল খোঁজ পেলেন আপওয়ার্ক ডটকম নামের একটি ওয়েবসাইটের। এটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস (আউটসোর্সিংয়ের কাজ দেওয়া–নেওয়ার মাধ্যম) হিসেবে পরিচিত। মামার পুরোনো কম্পিউটার নিয়ে সহিদুল আপওয়ার্কে কাজ করার কথা ভাবলেন। কিন্তু ইন্টারনেট–সংযোগ ছিল না। তখন তিনি তাঁর ভগ্নিপতির কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা ধার নিয়ে ইন্টারনেটের সংযোগ নিলেন।

শুরু হলো মার্কেটপ্লেসে কাজের আবেদন করা। এর পাশাপাশি চলে গুগল ও ইউটিউবে কাজ সম্পর্ক জানা–বোঝা। দিনের বেশির ভাগ সময় এভাবে চলে যেত। ডেটা এন্ট্রি, ই-কমার্স বিপণনের কাজও শিখতে থাকেন তিনি।

চেষ্টা আর উদ্যোগ

সহিদুল বলেন, ‘প্রতিদিন আপওয়ার্কে ৫ থেকে ১০টা আবেদন করতাম। কিন্তু কাজ পেতাম না। শেষে এমন অবস্থা, ইন্টারনেট বিল আর খাওয়া–পরার খরচ জোগানো কঠিন হয়ে উঠল। প্রায় এক বছর পর আমি প্রথম কাজ পাই।’ এই কাজের পারিশ্রমিক ছিল ঘণ্টাপ্রতি ২৫ সেন্ট (এখন বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ টাকা)। রাতে কাজের একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সকালে উঠে সহিদুল দেখেন গ্রাহক চুক্তিটি বাতিল করে একটা নেতিবাচক মন্তব্য (ফিডব্যাক) দিয়ে রেখেছেন। সহিদুল গ্রাহককে অনুরোধ করেন আবার কাজটা দেওয়ার। ওই গ্রাহক আরেকটা সুযোগ দেন, এবার সহিদুল সফলভাবে কাজটি সম্পন্ন করেন। এতে তাঁর সময় লাগে ১২০ ঘণ্টা। আয় করেন প্রায় ৩০ ডলার। অনলাইনে এটাই ছিল তাঁর প্রথম আয়। সেই গ্রাহক এরপর তাঁকে আরও কাজ দেন।

ধীরে ধীরে কাজের পরিমাণ বাড়ছিল। একসময় সহিদুলের একার পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। ২০১২ সালের শেষ দিকে ৫ জন কর্মী নিয়ে গড়ে তোলেন ‘সিএম ওয়ার্ক সল্যুশনস’ নামের প্রতিষ্ঠান। ২০১৮-১৯ সালের দিকে প্রতিষ্ঠানে কর্মীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৬০০।

২০২২ সালে বিশ্বখ্যাত ই–কমার্স সাইট অ্যামাজন তাদের নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনে, সে কারণে ছাঁটাই করতে হয়েছিল কিছু কমী। সহিদুল বলেন, ‘অনেক খারাপ লাগছিল। কিন্তু আমি আবার আগের অবস্থানে ফিরেছি, কর্মীর সংখ্যা বাড়াচ্ছি।’

সিএম সল্যুশনস এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের গ্রাহকদের কাজ করে। আর তা শিবচর থেকেই। কয়েকজন বিদেশি গ্রাহকও শিবচর ঘুরে গেছেন। সহিদুলের প্রতিষ্ঠান কাজ করে ই-কমার্স পরামর্শক হিসেবে। এ ছাড়া ই–কমার্সের স্বয়ংক্রিয় সেবা (অ্যামাজন অটোমেশন, ওয়ালমার্ট অটোমেশন), গ্রাহক সেবা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন নিয়েও কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান।

সহিদুল বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা এই প্রতিষ্ঠানে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করা। পাশাপাশি আমাদের কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কে আসল কে নকল বোঝা বড় দায় শুধু নামের মিলে বেরোবির শিক্ষক হয়

শিবচরে বসে ৩৫০ কর্মী নিয়ে বিদেশের কাজ করেন সহিদুল

আপডেট সময় ০১:২৩:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

মাদারীপুরের শিবচরে তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে সাজানো–গোছানো কার্যালয়। এটি সিএম ওয়ার্ক সল্যুশনস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে সহিদুল ইসলাম তথ্যপ্রযুক্তির আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন। তাঁর গ্রাহকদের সবাই বিদেশি। ৩৩ বছর বয়সী সহিদুলের একসময় নিজের একটা বাইসাইকেলের শখও পূরণ হয়নি। অথচ নিজের গড়া প্রতিষ্ঠানে এখন ৩৫০ জন কর্মী। সম্প্রতি শিবচরে গিয়ে কথা হয় সহিদুলের সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর জীবনের কথা।

বয়স তখন কতই বা হবে, ১২ কি ১৩ বছর। বন্ধুরা বাইসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াত, সহিদুল তখন তাকিয়ে দেখত। কৃষিজীবী বাবার সামর্থ্য ছিল না একটি বাইসাইকেল কিনে দেওয়ার। সহিদুল মনে মনে ভাবত, ‘একদিন আমি নিজের গাড়িই চালাব।’

সহিদুল বলেন, ‘নিজস্ব ভবনে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি, গাড়িও কিনেছি।’

শিবচরের পাশাপাশি সহিদুলের নিজের কার্যালয় রয়েছে ঢাকায়। সপ্তাহে এক দিন আসেন ঢাকায়।

প্রতিকূলতায় বেড়ে ওঠা

কাজের সুবিধার জন্য শিবচরে বসবাস করলেও সহিদুল ইসলামের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পশ্চিম সেনের চরে। কৃষক বাবা আনোয়ার হোসেন চোকদারের কৃষিপণ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসা ছিল। আনোয়ার হোসেনের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় সহিদুল। জন্ম ১৯৯০ সালে। জাজিরা মহর আলি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ২০০৬ সালে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন ঢাকায় বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ থেকে। এরপর রাজধানীর ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তিন সেমিস্টারের বেশি পড়াশোনা চালাতে পারেননি।

২০০৭ সালের দিকে বাবা আনোয়ার হোসেন চোকদার ভাগ্য বদলাতে গিয়েছিলেন বিদেশে। সহিদুল বলেন, ‘পাঁচ বছর ভালোই চলছিল। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। পরে বাবা দেশে ফিরে এলে আয় কমে আসে। পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। চাচা–ফুফুদের সাহায্য নিয়ে তিন সেমিস্টার শেষ হয়। ২০১২ সালের দিকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা।’

বিরতির পরে ২০১৭ সালে ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন সহিদুল। এখন তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করছেন। অবশ্য পড়াশোনায় আবার নিয়মিত হওয়ার আগে সহিদুলকে স্বাবলম্বী হতে হয়েছে।

আউটসোর্সিং শুরুর কথা

২০০৮ সাল। উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর সহিদুল তখন আজিমপুরের একটা মেসে থাকেন। চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা। এক বন্ধুর কাছে শুনলেন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের কথা। বিষয়টির প্রতি একধরনের আগ্রহও তৈরি হলো। দিনভর চেষ্টা থাকে এ বিষয়ে জানা–বোঝা। দেশে-বিদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কিছু কাজ দক্ষ কর্মী বা কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়ে করিয়ে নেয়। ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবী হিসেবে কোনো ব্যক্তি এসব কাজ করেন।

সহিদুল খোঁজ পেলেন আপওয়ার্ক ডটকম নামের একটি ওয়েবসাইটের। এটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস (আউটসোর্সিংয়ের কাজ দেওয়া–নেওয়ার মাধ্যম) হিসেবে পরিচিত। মামার পুরোনো কম্পিউটার নিয়ে সহিদুল আপওয়ার্কে কাজ করার কথা ভাবলেন। কিন্তু ইন্টারনেট–সংযোগ ছিল না। তখন তিনি তাঁর ভগ্নিপতির কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা ধার নিয়ে ইন্টারনেটের সংযোগ নিলেন।

শুরু হলো মার্কেটপ্লেসে কাজের আবেদন করা। এর পাশাপাশি চলে গুগল ও ইউটিউবে কাজ সম্পর্ক জানা–বোঝা। দিনের বেশির ভাগ সময় এভাবে চলে যেত। ডেটা এন্ট্রি, ই-কমার্স বিপণনের কাজও শিখতে থাকেন তিনি।

চেষ্টা আর উদ্যোগ

সহিদুল বলেন, ‘প্রতিদিন আপওয়ার্কে ৫ থেকে ১০টা আবেদন করতাম। কিন্তু কাজ পেতাম না। শেষে এমন অবস্থা, ইন্টারনেট বিল আর খাওয়া–পরার খরচ জোগানো কঠিন হয়ে উঠল। প্রায় এক বছর পর আমি প্রথম কাজ পাই।’ এই কাজের পারিশ্রমিক ছিল ঘণ্টাপ্রতি ২৫ সেন্ট (এখন বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ টাকা)। রাতে কাজের একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সকালে উঠে সহিদুল দেখেন গ্রাহক চুক্তিটি বাতিল করে একটা নেতিবাচক মন্তব্য (ফিডব্যাক) দিয়ে রেখেছেন। সহিদুল গ্রাহককে অনুরোধ করেন আবার কাজটা দেওয়ার। ওই গ্রাহক আরেকটা সুযোগ দেন, এবার সহিদুল সফলভাবে কাজটি সম্পন্ন করেন। এতে তাঁর সময় লাগে ১২০ ঘণ্টা। আয় করেন প্রায় ৩০ ডলার। অনলাইনে এটাই ছিল তাঁর প্রথম আয়। সেই গ্রাহক এরপর তাঁকে আরও কাজ দেন।

ধীরে ধীরে কাজের পরিমাণ বাড়ছিল। একসময় সহিদুলের একার পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। ২০১২ সালের শেষ দিকে ৫ জন কর্মী নিয়ে গড়ে তোলেন ‘সিএম ওয়ার্ক সল্যুশনস’ নামের প্রতিষ্ঠান। ২০১৮-১৯ সালের দিকে প্রতিষ্ঠানে কর্মীর সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৬০০।

২০২২ সালে বিশ্বখ্যাত ই–কমার্স সাইট অ্যামাজন তাদের নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনে, সে কারণে ছাঁটাই করতে হয়েছিল কিছু কমী। সহিদুল বলেন, ‘অনেক খারাপ লাগছিল। কিন্তু আমি আবার আগের অবস্থানে ফিরেছি, কর্মীর সংখ্যা বাড়াচ্ছি।’

সিএম সল্যুশনস এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের গ্রাহকদের কাজ করে। আর তা শিবচর থেকেই। কয়েকজন বিদেশি গ্রাহকও শিবচর ঘুরে গেছেন। সহিদুলের প্রতিষ্ঠান কাজ করে ই-কমার্স পরামর্শক হিসেবে। এ ছাড়া ই–কমার্সের স্বয়ংক্রিয় সেবা (অ্যামাজন অটোমেশন, ওয়ালমার্ট অটোমেশন), গ্রাহক সেবা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন নিয়েও কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান।

সহিদুল বলেন, ‘আমার পরিকল্পনা এই প্রতিষ্ঠানে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করা। পাশাপাশি আমাদের কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।’