যুক্তরাজ্যের (ইউকে) প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, আপনি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।
শুক্রবার লন্ডন পল মলে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের মার্লবোরো হাউসের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কক্ষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকের পর যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম জানান, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ঋষি সুনাক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমি আপনাকে অনেক বছর ধরে অনুসরণ করছি। আপনি একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা।
সাইদা মুনা তাসনিম আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে তার দুই মেয়ে এবং স্ত্রী শেখ হাসিনার ভক্ত। সুনাক চান তার মেয়েরা যেন শেখ হাসিনার মতো নেতা হন।
সুনাক বলেন, আপনি আমার দুই মেয়ের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং ভূমিহীন ও গৃহহীনদের সরকারি খরচে বাড়ি দেওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তার গৌরবময় ভূমিকারও প্রশংসা করেন ঋষি সুনাক।
কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে ছয় শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে সুনাক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য।
তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে অভিহিত করেন।
৩৫ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে দুই নেতা দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
সুনাক বলেন, আমাদের সম্পর্ক ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চমৎকার। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে মূল্য দেয়।
বৈঠকের শুরুতে শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ঋষি সুনককে অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনি এত অল্প বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন! এমন তরুণদের নেতৃত্বে দেখে আমার ভালো লাগছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর কাছে আরও বড় বিনিয়োগ চেয়েছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নত করেছি।’
তিনি ঢাকা ও লন্ডনের মধ্যে একটি যৌথ ইস্তেহার স্বাক্ষর করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দুই নেতা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও কথা বলেন।
সুনাক বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছেন। সুনাক বলেন, যুক্তরাজ্য বুঝতে পেরেছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বড় বোঝা এবং বড় নিরাপত্তা হুমকি।
রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানালে সুনাক ইতিবাচক সাড়া দেন।
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ তাদের মধ্যে মাত্র সাতজনের সাথে সুনকের বৈঠক হয়েছে; যা প্রমাণ করে যে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত মুনা তাসনিম বলেন, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ব্রিফিংয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।