একইদিন রাতে মাঠে নেমেছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। নিজ নিজ ম্যাচে মনোযোগ থাকলেও অপরের ম্যাচের ফলও শিরোপার লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল। শিরোপা থেকেই আগেই অনেক পিছিয়ে গেছে রিয়াল। ফলে এখন কত দ্রুত চ্যাম্পিয়ন ট্রফি হাতে তোলা যায়, বার্সার সামনে কেবল সেই সময়েরই অপেক্ষা। দিনটি পুরোপুরিই জাভি হার্নান্দেজদের পক্ষেই গেছে। একদিকে তারা কষ্টসাধ্য জয় পেয়েছে, অন্যদিকে হেরে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
মঙ্গলবার (২ মে) রাতে ক্যাম্প ন্যুতে ওসাসুনাকে আতিথ্য দেয় বার্সা। এদিন ম্যাচের ফল পেতে উভয় দলকেই প্রায় শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ৩০ মিনিট না যেতেই ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে আগেই ব্যাকফুটে চলে যায় ওসাসুনা। একজন কম খেলা দলকেও তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি লেভান্ডফস্কি ও রাফিনিয়ারা। অথচ প্রথমার্ধে তারা ৭৭ শতাংশ বলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিল।
ম্যাচের প্রথম গোল আসতে সময় লাগে ৮৫ মিনিট। সেই একমাত্র গোলেই জয় পায় জাভির দল। এর আগে ২৬তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে বার্সেলোনা। আলেজান্দ্রো বাল্দের ক্রসে পেদ্রি ছুটে গিয়ে টোকা দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু সংযোগ ঠিকঠাক না হওয়ায় বল যায় বাইরে। এর পরপরই বড় ধাক্কাটি খায় ওসাসুনা। পেদ্রিকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন জোর্সে এররান্দো। রাফিনিয়ার ফ্রি কিক কাঁপায় ওপরের জাল। ফলে এবারও গোলবঞ্চিত স্বাগতিক দলটি।
৩২তম মিনিটে ওসাসুনার ত্রাতা গোলরক্ষক। রাফিনিয়ার উদ্দেশে বাড়ানো ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের লং পাস আটকাতে বক্সের বাইরে বেরিয়ে আসেন আইতর ফার্নান্দেজ; তিনি বার্সেলোনার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের পথ আগলে দাঁড়ান। তাতে রাফিনিয়া শেষ পর্যন্ত দুর্বল শটই কেবল নিতে পারেন, যা থাকেনি লক্ষ্যের ধারেকাছেও। ইবানেসের চ্যালেঞ্জে চোট পাওয়া গাভি সাচ্ছ্বন্দ্যবোধ করছিলেন না। ৩৬তম মিনিটে তাকে তুলে নিয়ে আনসু ফাতিকে নামান জাভি। এরপর বার্সেলোনার আক্রমণেও কিছুটা ধার বাড়ে। ৪১তম মিনিটে কর্নারে রোনালদো আরাউহোর প্রচেষ্টা অল্পের জন্য হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। এরপর গোলশূন্য ড্র নিয়ে দু’দল বিরতিতে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের জন্য বার্সেলোনার মরিয়া প্রচেষ্টার ছাপ ফুটে ওঠে। কিন্তু ওসাসুনার রক্ষণে চাপ দিলেও জালের নাগাল পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। ফলে শুরুর দশ মিনিটে লেভান্ডফস্কির একটি শট উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে, অন্যটি আটকে যায় গোলরক্ষকের গ্লাভসে। ৫৬তম মিনিটে পেদ্রির ক্রসে ডি ইংয়ের শট কোনোমতে গ্লাভসের ছোঁয়ায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন ওসাসুনা গোলরক্ষক। একটু পর ফের ফাতির নিচু শট আটকান গোলরক্ষক ফার্নান্দেজ।
বার্সেলোনার সুবর্ণ সুযোগ মিস হয় ৭৬তম মিনিটে। পেদ্রির থ্রু পাস ছুটে এসে ক্লিয়ার করেন গোলরক্ষক ফার্নান্দেজ। বল সোজা যায় ফেররান তরেসের পায়ে। চলন্ত বলে এই ফরোয়ার্ডের শটও বাইরে চলে যায়। পোস্টে রাখতে পারলেই সেটি নিশ্চিত গোল হত। একটু পর লেভান্ডফস্কির কারিকুরিতে জালে বল জড়ালেও তরেস অফসাইডে থাকায় হয়নি গোল। শেষ পর্যন্ত ৮৫তম মিনিটে ভাঙে ম্যাচের ডেডলক। লেভান্ডফস্কির ব্যাক পাসে ডি ইং হেডে বল বাড়িয়ে দেন বক্সের ভেতরে বাঁ দিকে থাকা আলবাকে। বাঁ পায়ের ভলিতেই তিনি জাল খুঁজে নেন। মুহূর্তে যেন হালে পানি খুঁজে পায় বার্সা শিবির। কষ্টের জয়ে তারা রিয়ালের চেয়ে ১৪ পয়েন্টে এগিয়ে গেল। রিয়াল কার্যত শিরোপা থেকে ছিটকে যাওয়ায়, তাদের একটি হারই এখন যথেষ্ট হতে পারে বার্সার জন্য।