কুখ্যাত গাঙ্গচিল বাহিনীর অন্যতম দলনেতা’ পেশাদার ডাকাত, খুনি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী রুহুল আমিন ওরফে লেদুকে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। র্যাব বলছে, ২০১২ সালে রাজধানীর শাহ আলী থানার বশির উদ্দীন বসু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও ৫ টি ডাকাতি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী সে। বিগত ১০ বছর ধরে সে ছদ্মবেশ ধারণ করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা সহ গাজীপুরে আত্নগোপনে ছিল।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার হাউজবিল্ডিং এলাকায় গোপনে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪ এর একটি দল। আজ শুক্রবার সকালে র্যাব-৪ এর এএসপি মো: জিয়াউর রহমান চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি দল বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার হাউজবিল্ডিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও ৫ টি ডাকাতি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী রুহুল আমিন ওরফে লেদু (৪৫)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০০০ সাল থেকে সাভার মডেল থানার আমিন বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার মধ্য দিয়ে উত্থান হয় গাঙ্গচিল বাহিনীর। যার প্রধান ছিল আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার।
সাভারের পানিবেষ্টিত বিস্তর এলাকাকে আস্তানা বানিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করায় এর নামকরণ হয় গাঙ্গচিল বাহিনী। তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীর দুই ধারে ব্যাপক পরিসরে একক অধিপত্য বিস্তার করেছিল এই বাহিনী। আনোয়ার হোসেন আনার নিহতের পর গাংচিল বাহিনী কয়েকটি গ্রুপে ভেঙ্গে গেলে একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতে শুরু করে আসামী রুহুল আমিন ওরফে লেদু। তার নেতৃত্বে এ গ্রুপের সদস্যরা আমিন বাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, খুন ইত্যাদি কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। র্যাব বলছে, ২০১২ সালে শাহ আলী থানার বশির উদ্দীন বসু হত্যা মামলায় আদালত আসামী লেদু’কে যাযবজ্জীবন সাজা প্রদান করে। আসামী রুহুল আমীন ওরফে লেদু বশির হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততা সহ আরও ৫ টি ডাকাতি মামলায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। হত্যাকান্ডের পরপরই সে আত্মগোপনে চলে যায়। এছাড়া লেদু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে গত ১০ বছর ধরে ছদ্মবেশ ধারণ করে গাজীপুর, উত্তরা, টঙ্গী, বাড্ডা, রামপুরাসহ পূরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে আসছিল। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্হা গ্রহন এবং তাকে আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।