মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য নিয়ে মিথ্যাচার করেছে সরকার। যা মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে প্রমাণিত।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ফখরুল বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমরা আনন্দিত নই, এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত সরকারের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কর্মসূচির সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা করার তীব্র সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, একই দিনে কর্মসূচি দিলে কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে এর দায় আওয়ামী লীগকে নিতে হবে।
বিরোধী দলকে দমন করতে ইসরায়েল থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কেনা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মুঠোফোন ও ইন্টারনেট যোগাযোগের ওপর নজরদারির জন্য ইসরাইলি কোম্পানির কাছ থেকে প্রযুক্তি কেনা হয়েছে বলে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের। একই সঙ্গে সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর টেলিফোনে আড়িপাতার বিষয়ে আইন প্রণয়নের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনির্বাচিত সরকার অবৈধ উপায়ে দখল করা ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নজরদারিতে রাখতে এসব প্রযুক্তি ক্রয় ও আড়িপাতার আইন প্রণয়ন করতে চলেছে। এই ভয়াবহ নিবর্তনমূলক আইন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অগণতান্ত্রিক আচরণ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। অবিলম্বে এসব প্রযুক্তি ক্রয় ও আইন প্রণয়নের অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় গত চার বছরে এক হাজার ২০৯টি মামলা দায়ের হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে এই চরম নির্বতনমূলক আইনের মাধ্যমে ভিন্নমত পোষণকারী ব্যক্তি, সংবাদকর্মী, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আটকের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারের ওপর চরম আঘাত করা হচ্ছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। নিরপরাধ ব্যক্তিদের ওপর এই আইনের অপপ্রয়োগের ফলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই আইনের আওতায় বন্দিদের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, সম্প্রতি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্ব, দলের গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচি নিয়ে যে এখতিয়ার বহির্ভূত, শিষ্টাচার বিবর্জিত অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করেছেন তার তীব্র নিন্দা জানাই।