পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের শীর্ষ ক্যাডার মাফিয়া ডন আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের ঘনিষ্ঠ সহোচর কল্পনা মারিয়া ফলিয়া প্রতারণার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতা প্রয়োগ ও আগষ্টিনের পৃষ্ঠপোষকতায় অনেক নিরীহ মানুষকে সর্বসান্ত করেছেন। সাধারণ কাঠমিস্ত্রির স্ত্রী হয়েও আগষ্টিনের বান্ধবী হওয়ার সুবাদে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
সূত্র মতে, কল্পনা মারিয়া ফলিয়া প্রতারণার অন্যতম শিকার হচ্ছেন আমজাদ হোসেন মোল্লা। গাজীপুর মহানগরের ৪১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমজাদ হোসেন মোল্লাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন সময়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কল্পনা মারিয়া ফলিয়ার (৫০) বিরুদ্ধে। সম্প্রতি গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সিটির ৪১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমজাদ হোসেন মোল্লা সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আমজাদ হোসেন মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল ফারুক খান, গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক এমপি মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মতিউর রহমানের প্রভাব ও দোহাই দিয়ে বিভিন্নভাবে শারীরিক মানসিক হেনস্তাসহ বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন মারিয়া।
নিজেকে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় নেত্রী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ডেকে নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে ছবি তুলে পরিবারের লোকজনের হাতে দিতেন। সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে সামাজিকভাবে হেয় করতেন। আমজাদের অভিযোগ, মারিয়া ছবি এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে গত ৩০ জুলাই সুন্দরবন কুরিয়ারে ১২ পৃষ্ঠার চিঠি লিখে ক্ষমা চেয়েছেন। আমজাদ বলেন, আমি ইতোমধ্যে মারিয়া ফলিয়ার বিরুদ্ধে তার ছেলে পলাশ, স্বামী লরেন্স ফলিয়াকে অবহিত করেছি।
এমনকি তার কর্মস্থল দ্যা মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকেশন, পরিচালক সুজয় পিউরিফিকেশন, সাধারণ সম্পাদক ইমানুয়েল বাপ্পি মন্ডল ও ম্যানাজার বাদল সিমস্যাংকে জানানো হয়েছে। মারিয়া ফলিয়ার প্রতারণা, হয়রানি ও জালিয়াতি থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন এই কাউন্সিলর। কল্পনা মারিয়া ফলিয়া দ্যা মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের বান্ধবী হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় আইন আদালত তোয়াক্কা না করে নানাভাবে মানুষকে হয়রানি করে টাকা আদায় করতেন।
তাকে পুলিশী প্রটেকশন দিতেন আগষ্টিন। আবার আগষ্টিনও তার নানা স্বার্থসিদ্ধির জন্যে কল্পনাকে ব্যবহার করতেন। অভিযোগ ওঠার পর দ্যা মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির পরিচালক পদ থেকে কল্পনা ফলিয়াকে অপসারণ করে নাটক সাজিয়েছেন আগষ্টিন। কল্পনা ফলিয়ার অপকর্মের দায় আগষ্টিন এড়াতে পারেন না বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন।