আমরা কারো অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারেও বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করি না। খালেদা জিয়ার ব্যাপারটাও আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার, ১৪ জুন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রজেক্ট’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বের সব দেশেই ডেমোক্রেসি আছে, নির্বাচন হচ্ছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬ জানুয়ারি ডেমোক্রেসির নামে যা হলো আমরা তো সেটা নিয়ে প্রশ্ন করিনি। ৬টি প্রাণ ঝরে গেল সেখানে। আমরা তো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারেও বাইরের হস্তক্ষেপ যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করি না। খালেদা জিয়ার ব্যাপারটাও আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বেগম জিয়ার ব্যাপারে অসুস্থতা নিয়ে যতটা উদ্বিগ্ন, তার চেয়ে মনে হয় তাকে নিয়ে রাজনীতি করাটাই তাদের বড় চর্চা। তারা বেগম জিয়ার জন্য কিছু করতে পারেনি এবং বাইরে তেমন কোনো আন্দোলন করতে পারেনি, যে তাতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। খালেদা জিয়ার বিষয়টি আমাদের আইনমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেখছেন। তারাই উচ্চপর্যায়ে কথা বলছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবাই মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে বাস্তবে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিছু না কিছু ত্রুটি আছে। আমরাও আমাদের গণতন্ত্রকে পারফেক্ট বলব না। আমাদের গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা করছি।
বিএনপি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরের নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করেনি। বরিশাল ও খুলনায় নির্বাচন হলো। কক্সবাজারে নির্বাচন হলো, অত্যন্ত কঠিন জায়গা। আপনি কতটা জনপ্রিয়, প্রমাণ করতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে।
কাদের বলেন, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংককে না পাওয়া সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বড় ভুল বোঝাবুঝি। এজন্য শুধু বিশ্বব্যাংককে দায়ী করা যাবে না। এর সঙ্গে আমাদের দেশের কিছু বাঘা বাঘা ব্যক্তিও জড়িত ছিল।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনো (যোগাযোগে এমন উন্নয়ন) হয়নি। এটি বিরাট এক অর্জন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যতই পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, একদিনে শত সেতু উদ্বোধনের ইতিহাস সৃষ্টি করি। মন্ত্রী হিসেবে এত উন্নয়নের পরেও এই অ্যাক্সিডেন্টের কারণে স্বস্তি পাচ্ছিলাম না। আমরা এটা কি এড়াতে পারি না? এমনভাবে (বাজেভাবে) কেন দুর্ঘটনা ঘটবে?
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিষয় যাচাই-বাছাই বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কি হিউম্যান রাইটসের আদর্শে চলি? তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আমরা চলি? আমাদের উন্নয়ন, আমাদের উন্নতি, আমাদের সমৃদ্ধি, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ, আমাদের এখনকার স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনা কি তাদের কথায় করি? আমরা তো এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা তো আমাদের দেশটার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন বাইরের বিষয়ে নানান হস্তক্ষেপ থাকে। আমার মনে হয় প্রত্যেকেরই নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখা উচিত। আমরা কারো চাপে নতি স্বীকার করি না, করব না।