ঢাকা ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, বাতাস ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পাচ্ছে সংস্কার কমিশনগুলো যেসব বিষয়ে বড়সড় পরিবর্তনের কথা ভাবছে রাজশাহীতে ব্যাটারী চালিত ভ্যানগাড়ীর সাথে মটরসাইকেলের সংঘর্ষে এক যুবকের-মৃত্যু কুমিল্লা মিডিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ১৬-তম আসরের উদ্বোধন তারেক রহমানের নেতৃত্বেই নিরাপদ আগামীর বাংলাদেশ: যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না জুলুম-অন্যায়কে বিএনপি প্রশ্রয় দেবে না নাগেশ্বরীতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ পছন্দের বিয়ের বিপক্ষে অধিকাংশ পাকিস্তানি সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বাড়বে

সুদ পরিশোধেই যাবে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা

বর্তমানে এমনিতেই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কমছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে ঋণযোগ্য তহবিল কম থাকায় অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের ঋণ চাহিদার বেশিরভাগই মেটাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে আগামী অর্থবছর ব্যাংক থেকে রেকর্ড ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে যা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের খরচ বাড়লেও আশানুরূপ রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। আবার সঞ্চয়পত্রে বিক্রির চেয়ে পরিশোধ হচ্ছে বেশি। বিদেশি উৎস থেকে আগের তুলনায় ঋণ কমেছে। এসব কারণে এখন ব্যাংক ব্যবস্থা থেকেই সরকারকে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার নিট ৭৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে ৬৭ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সরবরাহ করার বিষয়টি সরাসরি টাকা ছাপানোর মতো। এ রকম প্রবণতা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়। এমনিতেই এখন ৯ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণ আরও বাড়লে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ অনেক বাড়বে।

অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে ঋণ না বেড়ে উল্টো গত এপ্রিল পর্যন্ত কমেছে ৩ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এরপরও সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

সুদ পরিশোধেই যাবে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা

সরকারের ঋণ বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে সুদ পরিশোধের চাপ। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে ঋণস্থিতি রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা। এ ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে করে বাড়ছে সুদ পরিশোধের চাপ। আগামী অর্থবছর অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎসে সুদ পরিশোধে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ বাবদ ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে তা ৯০ হাজার ১৩ কোটি টাকা করা হয়েছে।

গত এপ্রিল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের ঋণ ছিল ৭ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। ব্যাংক ব্যবস্থায় রয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা।

আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণের সুদহার অনেক কম থাকে। আবার এসব সংস্থার ঋণে বাস্তবায়িত প্রকল্পে তদারকি বেশি হয়। যে কারণে দুর্নীতির সুযোগ থাকে কম। অর্থনীতিবিদরা সব সময় এ ধরনের সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ায় উৎসাহিত করেন। রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন, ডলারের দর অনেক বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সংকটের মধ্যে কয়েক বছর পর এ ধরনের সংস্থা থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া গেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, বাতাস ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পাচ্ছে

সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বাড়বে

সুদ পরিশোধেই যাবে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা

আপডেট সময় ০১:৫২:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩

বর্তমানে এমনিতেই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কমছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে ঋণযোগ্য তহবিল কম থাকায় অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের ঋণ চাহিদার বেশিরভাগই মেটাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে আগামী অর্থবছর ব্যাংক থেকে রেকর্ড ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে যা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের খরচ বাড়লেও আশানুরূপ রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। আবার সঞ্চয়পত্রে বিক্রির চেয়ে পরিশোধ হচ্ছে বেশি। বিদেশি উৎস থেকে আগের তুলনায় ঋণ কমেছে। এসব কারণে এখন ব্যাংক ব্যবস্থা থেকেই সরকারকে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার নিট ৭৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে ৬৭ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সরবরাহ করার বিষয়টি সরাসরি টাকা ছাপানোর মতো। এ রকম প্রবণতা মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দেয়। এমনিতেই এখন ৯ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণ আরও বাড়লে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ অনেক বাড়বে।

অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে ঋণ না বেড়ে উল্টো গত এপ্রিল পর্যন্ত কমেছে ৩ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। এরপরও সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

সুদ পরিশোধেই যাবে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা

সরকারের ঋণ বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে সুদ পরিশোধের চাপ। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে ঋণস্থিতি রয়েছে প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা। এ ঋণের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে করে বাড়ছে সুদ পরিশোধের চাপ। আগামী অর্থবছর অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎসে সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎসে সুদ পরিশোধে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ বাবদ ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে তা ৯০ হাজার ১৩ কোটি টাকা করা হয়েছে।

গত এপ্রিল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের ঋণ ছিল ৭ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। ব্যাংক ব্যবস্থায় রয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা।

আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণের সুদহার অনেক কম থাকে। আবার এসব সংস্থার ঋণে বাস্তবায়িত প্রকল্পে তদারকি বেশি হয়। যে কারণে দুর্নীতির সুযোগ থাকে কম। অর্থনীতিবিদরা সব সময় এ ধরনের সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ায় উৎসাহিত করেন। রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন, ডলারের দর অনেক বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সংকটের মধ্যে কয়েক বছর পর এ ধরনের সংস্থা থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া গেছে।