তিন বছর ধরে জাতীয় দলের বাইরে দেশের ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। জাতীয় দল থেকে দূরে থাকলেও এখনো ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন ম্যাশ। তবে চলতি বিপিএলকেই মাশরাফীর শেষ পেশাদার ক্রিকেট ভাবা হচ্ছে। কদিন আগে মাশরাফির বাবাও এমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে এমন কিছু ভাবছেন না ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। যতদিন খেলাটা উপভোগ করছেন, খেলে যেতে চান।
রংপুরকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যাশিতভাবেই মাশরাফির কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়। নিজের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ম্যাশ বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আমার জাতীয় দলে খেলার ইচ্ছে নেই। আমি যতক্ষণ উপভোগ করছি, যতক্ষণ শরীর সাপোর্ট দিচ্ছে, আমি খেলছি। আমি বলে-কয়ে খেলা ছাড়ার লোক না। প্রেস কনফারেন্স করে, ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। যদি টুর্নামেন্টের মাঝে মনে হয় খেলব না, তাহলে খেলব না। এমন আলোচনা আপাতত কেয়ার করার দরকার আছে বলে মনে করি না।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় বদনাম যে, তারকা ক্রিকেটাররা মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারেন না। তবে এসব নিয়ে থোরাই কেয়ার মাশরাফির। সিলেট স্ট্রাইকার্সের এই নেতা কদিন আগে জানিয়েছিলেন, নিজের ব্যাপারে কোনো আশা নেই। তবে তিনি এও জানান, ‘আমি মনে করি এটা (সম্মানজনক বিদায়) হওয়া উচিত। প্রতিটি খেলোয়াড় বিশেষ করে সাকিবসহ এখন যারা আছে। আমি আমারটা বলতে পারবো না কারণ আমি অনেকদিন আগেই সেটা ছেড়ে এসেছি। আই হ্যাভ নো এক্সপেক্টেশন।’
আবেগপ্রবণ হয়ে ম্যাশ বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের এখানে বলে গিয়েছিলাম যে, আমি যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি তখন কিন্তু জাতীয় দলে খেলবো বলে আশা করিনি। বাসা থেকে চাপ ছিল যে তুমি পড়ালেখা করো, কিন্তু আমি ক্রিকেটটাকে বেছে নিয়েছি। তখন কিন্তু এত অর্থ গাড়ি বাড়ি আমার কিছুই ছিল না। সুতরাং ক্রিকেট দিয়েই কিন্তু আমার জীবনে সবকিছু হয়েছে। একটা পর্যায়ে ক্রিকেট আমার শুধু প্যাশন থেকে প্রফেশন হয়েছে। ক্রিকেট নিয়ে আমার প্যাশনটা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে একটা পর্যায়ে আমাকে অর্থ না দিলেও আমি ক্রিকেট খেলতাম। যেটা আপনাদের এখানে বারবার বলেছি। এমন কোনো অর্থ আমি ক্রিকেট থেকে এখন পাই না। সে অর্থে এখন এটা আমার প্রফেশন না। এটা প্যাশন।’
মাশরাফি বলেন, ‘আমি যখন ক্লাস সিক্স সেভেন কিংবা এইটে পড়ি এমনকী যখন ক্রিকেটের ওই ইমেজটা ছিল না তখন থেকেই এই স্পোর্টসটাকে আমি ভালোবেসেছি। বিশেষ করে এই স্পোর্টসের প্রতি আমার যে ভালোবাসা আছে অন্য আরেকজন ক্রিকেটারেরও তাই আছে। তবে অন্যদেরটা হয়তো বলতে পারবো না। তবে আমারটা বলতে পারবো। আমি ক্রিকেটটা খেলেছি কারণ আমি এটাকে ভালোবেসেছি এবং এখনও বাসি তাই খেলি।’
বাইশগজে খেলে গেলেও কোনো প্রত্যাশা নেই বলেও জানালেন ম্যাশ। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো এক্সপেক্টেশন (প্রত্যাশা) নিয়ে যেমন আসিনি, যেতেও চাইনি। তিন বছর আগেও কিন্তু কোনো প্রত্যাশা নিয়ে আমি এখান থেকে যাইনি।এ নিয়ে কোনো রাগ, ক্ষোভ, কিছুই নেই। কেবল বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা আছে।’