কিছুক্ষণ আগেই দেশের হয়ে এশিয়ান আসরে স্বর্ণ জিতেছেন। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছিলেন বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান। এরই এক ফাঁকে কাজাখস্তানের আস্তানা থেকে গতকাল মধ্যরাতে ঢাকা পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার আরাফাত জোবায়েরকে দিয়েছেন বিশেষ এক সাক্ষাৎকার।
প্রতিবেদক : অভিনন্দন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন আপনাকে নিয়ে গর্বিত, আপনার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া কি?
ইমরান : আমি সবসময় বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জিততে চেয়েছি৷ বাংলাদেশকে পদক এনে দিতে পেরে নিজেও তৃপ্ত।
প্রতিবেদক : এই আসরের শুরুতে কি ভেবেছিলেন স্বর্ণ জিততে পারবেন?
ইমরান : পদকের স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম, এটি সত্যি। তবে স্বর্ণ জিতে নেব ভাবিনি। যখন ফাইনালে উঠলাম তখন চিন্তা করলাম স্বর্ণ’র জন্যই লড়ব৷
প্রতিবেদক : গত বছর বিশ্ব ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে আপনি দৌড়াননি৷ এবার কি বিশেষ সতর্ক ছিলেন?
ইমরান : বিগত আসরের ভুল ও সমস্যা যেন না হয়, সেজন্য খুব খেয়ালী ছিলাম।
প্রতিবেদক : এশিয়ান ইনডোরে আপনি সেরা। বিশ্ব ইনডোরেও সেরা হওয়ার সম্ভাবনা কেমন দেখেন?
ইমরান : ৬ দশমিক ৫৯ টাইমিংয়ে এশিয়ান সেরা হয়েছি। বিশ্ব ইনডোরে সেরা হতে হলে ৬ দশমিক ৪ প্রয়োজন। আগামী বছর বিশ্ব ইনডোর রয়েছে। সে লক্ষ্যে আমি প্রস্তুত হব৷ বিশ্ব আসরে বাংলাদেশকে পদক এনে দিতে চাই।
প্রতিবেদক : এশিয়ান ইনডোরে আপনি ৬০ মিটারে সেরা হয়েছেন। অ্যাথলেটিকস তো বটেই বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য অনেক বড় বিষয়। এরপরও আপনাকে ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানবের পদক নিয়ে বাংলাদেশ বড় প্রত্যাশা করে।
ইমরান : এই বছর চীনে এশিয়ান গেমস রয়েছে। আগামী বছর হয়তো সাফ গেমস৷ দুটি আউটডোরের জন্যই বিশেষভাবে তৈরি হব৷
প্রতিবেদক : আউটডোর স্প্রিন্টের চেয়ে কি আপনি ইনডোর স্প্রিন্টে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
ইমরান : আমি দৌড়াতে ভালোবাসি৷ সেটা আউটডোর কিংবা ইনডোর। শর্ট ডিসটেন্সে আমার টাইমিং বেশি ভালো, হয়তো এজন্য ইনডোরে বৈশ্বিক পর্যায়ে তুলনামূলক ভালো হচ্ছে।
প্রতিবেদক : আপনি ইংল্যান্ডে ছিলেন। সেখান থেকে বাংলাদেশের হয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন এবং এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সেরা অ্যাথলেট হলেন৷ বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
ইমরান : প্রথমে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আমার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে সুযোগ না দিলে এসবের কিছুই হতো না৷ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের পাশাপাশি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ও সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। তারাও আমাকে যথেষ্ট সহায়তা করেছে।
প্রতিবেদক : এশিয়ান ইনডোরে আপনার সাফল্য কাকে উৎসর্গ করতে চান?
ইমরান : আমাকে যারা সহায়তা ও সমর্থন জুগিয়েছে তাদের সবাইকে উৎসর্গ করছি এই সাফল্য।
প্রতিবেদক : আপনার এই সাফল্য বাংলাদেশের অন্য ক্রীড়াবিদদেরও সমর্থন জোগাবে নিশ্চয়ই!
ইমরান : বাংলাদেশের অনেকেরই সামর্থ্য রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পদক জেতার৷
প্রসঙ্গত, শনিবার এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে ৬০ মিটার স্প্রিন্টে প্রথম কোন বাংলাদেশি হিসেবে স্বর্ণপদক জিতলেন ইমরানুর। একইদিন সকালেই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনের হিটে প্রথম হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন ইমরানুর।