পত্নীতলায় উপজেলায় বেড়েছে সরিষার আবাদ। মাঠে মাঠে মৌ মৌ গন্ধ, ভ্রমর ছুটছে মধু আহরণে, সরিষার ক্ষেতগুলো যেন প্রকৃতির হলুদ কন্যায় সেজেছে, দিগন্ত জুড়ে হলুদের বাহার, বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার ফুলগুলো।
এ দৃশ্য সকলেকেই আকৃষ্ট করছে। জনপদ নওগাঁর পত্নীতলায় উপজেলায় আকবরপুর ইউনিয়ন নান্দুরা গ্রামে বেড়েছে সরিষার আবাদ। বাজারে তেলের দাম বেশী হওয়ায় গ্রাম মানুষ রা হিম সিম খাচ্ছে তাই এবার সরিষা চাষে ঝুকেছে কৃষক, কৃষিতে খরচ বেড়েছে তাই অল্প জমিতে বেশী ফসল ফলন করার আশায় রোপা আমণ কাটাঁর পরেই জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষে প্রস্তুত করে কৃষকরা। স্বল্প খরচ আর কম সময়ে সরিষা চাষে বেশী লাভ। প্রতিবিঘা জমিতে সরিষার গড়ে ৫ থেকে ৬ মণ হয়।
যা ৫/৬ জনের একটি পরিবারের সারা বছরের তেলের চাহিদা পূরন করতে পারে। এর মেডিসিনাল ভেল্যুও আছে। সরিষার শিকড়ে নডিউল থাকে যা জমিতে নাইট্রোজেন যোগ করে। জৈব সার হিসেবে ও সরিষা গাছ অনেক গুরুত্ববহন করে। সরিষার খৈল পুকুরে এবং জমিতে ও গবাদিপশুর খাবার হিসেবে খুব গুরুত্বপুর্ন। উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে সরিষা চাষ। প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে ফলন বেশি হওয়ায় বারি-১৪ ও বারি-১৫, বারি ১৭, বারি ১৮, বিনা -৪ জাতের সরিষা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ শুরু করেছেন। এরপর আবার বোরো ধান রোপণ করবেন তারা। ফলে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায় সরিষা গাছে ফুল এসেছে অনেক গাছে ফলও এসেছে সরিষা চাষিরা জানান, এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন তারা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব মতে চলতি বছরে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর । সেখানে চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৩৫০ হেক্টর ।
গত বছর লক্ষ মাত্রা ছিল ৫ হাজার হেক্টর। বাম্পার ফলনের আশা কৃষক ও কৃষি বিভাগের। উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের নান্দুরা গ্রামের কৃষক সোলাইমান, মজজিদ, মুত্তালেব সহ অনেকে বলেন গতবছরের চেয়ে এবার দ্বিগুন জমিতে সরিষার আবাদ করেছে, কৃষক আনোয়ার বলেন সরকারি প্রণোদনার বীজ পেয়ে বাড়ি ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন আশা করছেন ফলন ভাল হবে।
অনেক কৃষক জানান প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা দরে। প্রতি বিঘাতে গড়ে ৬/৭ মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা লাভ করা যায়। কম সময়ে কম খরচে বেশী লাভ হয় সরিষা তোলার পরে বোরর আবাদ হয়। চলতি মওসুমে এ উপজেলায় টরি ৭, বিনা ৪ বারি ৯ বারি-১৪, ১৫,১৭,১৮ ও সম্পদ জাতের সরিষা চাষ হয়ছে। অনেক কৃষক জানিয়েছেন সার শঙ্কট রয়েছে বিশেষ করে পটাশ সার প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না সাড়ে সাতশত টাকার পটাশ ১৫/১৬ শ টাকা বস্তা কিনতে হচ্ছে খোলা বাজারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, স্বল্প খরচে, কম সময়ে লাভজনক ফসল এটি। সরকারের কৃষিতে সুদৃষ্টি রয়েছে উপজেলায় সরকারী ভাবে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে ৪ হাজার কৃষককে । ভাল বীজ এর পর্যাপ্ততা এবং প্রণোদনা প্রদান ও আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষা আবাদ বেড়েছে। প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়।সরিষা আবাদের ফলে তেলের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।