ঢাকা ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজবাড়ী সদরের আলীপুরে একই সময় দুই স্বামীর সঙ্গে সংসার জান্নাতুলের, এলাকায় চাঞ্চল্য শেখ হাসিনার পতন ও বিতর্কিত ঠিকাদার শাহ আলমের সখ্যতার নতুন খেলা” গুলশানে বেদখল হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি, জানা গেল বাড়িগুলোর নাম-ঠিকানা প্রয়োজন ছাড়া প্রকল্প তৈরি নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ কোটি টাকা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্মকর্তারা। ইলিয়াস কাঞ্চন এবং যুব ও ক্রীড়া ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এর মত বিনিময় অনুষ্ঠিত সার্ক ‘আইকন অব সার্জারি’ সম্মাননা পেলেন অধ্যাপক ডা. মওদুদ সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল সাংবাদিক নূরুল কবিরকে বিমানবন্দরে হয়রানি, জামায়াতের উদ্বেগ নয়াদিল্লির প্রেস মিনিস্টার হলেন দুই সাংবাদিক ঐক্যকে রাখতে হবে ইস্পাত কঠিন অটুট: জামায়াত আমির

প্রাচীন আরবি কবিতায় মরু-প্রভাব

দিগন্তহীন বিস্তীর্ণ মরুপথে ঊর্ধ্বারোহী বেদুঈনের কারাভা সংগীতের সুরে সুরে যে আরবি কবিতার পথচলা আরম্ভ হয়েছিল, সেই কবিতা বিচিত্র মরুপ্রকৃতি ও মরুজীবনের নানা ঘাতপ্রতিঘাত অবলম্বন করেই তার সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা অতিক্রম করেছে। রুক্ষ মরুপ্রকৃতি আরববাসীর স্বভাবচরিত্রকে যেমন প্রভাবিত করেছে তেমনি তাদের মনোজগেকও নাড়া দিয়েছে প্রচণ্ডভাবে। সুতরাং তাদের মননশীল সাহিত্যে এই মরুর প্রচ্ছন্ন প্রভাব অস্বীকার করার কোনো জো নেই। মরুর রূপ-প্রকৃতি, রস-গন্ধ, আলো-বাতাস সবই অত্যন্ত বাঙ্ময় হয়ে ফুটে উঠেছে বেদুঈনের রচিত কবিতায়।

মরুকেন্দ্রিক জীবনাচার, মরুসভ্যতা ও মরুসংস্কৃতি সার্থকরূপে প্রতিফলিত হয়েছে মরুবাসী কবির লেখনীতে। কবিতার শব্দনির্মাণ থেকে শুরু করে দেহাবয়ব গঠনে, বয়ানভঙ্গি ও বিষয়বস্তু উপস্থাপনে, উপমার ব্যবহারে সর্বত্র প্রাচীন আরবি কবিতায় ধূসর মরুর প্রভাব দেদীপ্যমান।

প্রাচীন আরবি ভাষা ও সাহিত্যে মরু-আবহের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল বলেই উমাইয়া ও আব্বাসীয় যুগের বিদগ্ধজনরা তাঁদের সন্তানদের বিশুদ্ধ আরবি শেখার লক্ষ্যে নগর পরিবেশ ছেড়ে মরু পরিবেশে গমন করার পরামর্শ দিতেন। এমনকি, তৎকালীন ভাষাতাত্ত্বিক পণ্ডিতগণ বৈয়াকরণিক সূত্রনির্মাণে কেবল মরুবাসী বেদুঈন কবির ভাষাকেই গ্রহণযোগ্য ও প্রামাণিক হিসেবে বিবেচনা করতেন। এ ক্ষেত্রে নগর কবিদের কাব্য-ভাষা তাঁদের কাছে প্রামাণ্য বলে বিবেচিত হতো না। আসলে যে মরুর উদরে আরবি কবিতার জন্ম হয়েছে সেই মরুর মাতৃক্রোড়েই ওই কবিতা লালিত-পালিত হয়ে পরিপুষ্ট হয়েছে। সুতরাং মরু-প্রসূত এই সাহিত্যে মরুর অনিবার্য প্রভাব অনস্বীকার্য। পাশাপাশি লক্ষণীয় যে মরুভূমির প্রাকৃতিক দৃশ্য ও নৈসর্গিক চিত্র অবগাহন ছাড়া যেমন এই সাহিত্যের রস আস্বাদন সম্ভব নয়, তেমনি মরুবাসী বেদুঈনের আর্থসামাজিক অবস্থা অনুধাবন ব্যতিরেকে এর মর্মোদ্ধার প্রায় অসম্ভব। এতে বোঝা যায়, মরু-পরিবেশ ও মরু-সাহিত্য এই দুয়ের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং বলা যায়, প্রাচীন আরবি কবিতার উৎকর্ষ সাধনে মরু-পরিবেশের প্রভাব অত্যন্ত শক্তিশালী।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজবাড়ী সদরের আলীপুরে একই সময় দুই স্বামীর সঙ্গে সংসার জান্নাতুলের, এলাকায় চাঞ্চল্য

প্রাচীন আরবি কবিতায় মরু-প্রভাব

আপডেট সময় ১১:১৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

দিগন্তহীন বিস্তীর্ণ মরুপথে ঊর্ধ্বারোহী বেদুঈনের কারাভা সংগীতের সুরে সুরে যে আরবি কবিতার পথচলা আরম্ভ হয়েছিল, সেই কবিতা বিচিত্র মরুপ্রকৃতি ও মরুজীবনের নানা ঘাতপ্রতিঘাত অবলম্বন করেই তার সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা অতিক্রম করেছে। রুক্ষ মরুপ্রকৃতি আরববাসীর স্বভাবচরিত্রকে যেমন প্রভাবিত করেছে তেমনি তাদের মনোজগেকও নাড়া দিয়েছে প্রচণ্ডভাবে। সুতরাং তাদের মননশীল সাহিত্যে এই মরুর প্রচ্ছন্ন প্রভাব অস্বীকার করার কোনো জো নেই। মরুর রূপ-প্রকৃতি, রস-গন্ধ, আলো-বাতাস সবই অত্যন্ত বাঙ্ময় হয়ে ফুটে উঠেছে বেদুঈনের রচিত কবিতায়।

মরুকেন্দ্রিক জীবনাচার, মরুসভ্যতা ও মরুসংস্কৃতি সার্থকরূপে প্রতিফলিত হয়েছে মরুবাসী কবির লেখনীতে। কবিতার শব্দনির্মাণ থেকে শুরু করে দেহাবয়ব গঠনে, বয়ানভঙ্গি ও বিষয়বস্তু উপস্থাপনে, উপমার ব্যবহারে সর্বত্র প্রাচীন আরবি কবিতায় ধূসর মরুর প্রভাব দেদীপ্যমান।

প্রাচীন আরবি ভাষা ও সাহিত্যে মরু-আবহের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল বলেই উমাইয়া ও আব্বাসীয় যুগের বিদগ্ধজনরা তাঁদের সন্তানদের বিশুদ্ধ আরবি শেখার লক্ষ্যে নগর পরিবেশ ছেড়ে মরু পরিবেশে গমন করার পরামর্শ দিতেন। এমনকি, তৎকালীন ভাষাতাত্ত্বিক পণ্ডিতগণ বৈয়াকরণিক সূত্রনির্মাণে কেবল মরুবাসী বেদুঈন কবির ভাষাকেই গ্রহণযোগ্য ও প্রামাণিক হিসেবে বিবেচনা করতেন। এ ক্ষেত্রে নগর কবিদের কাব্য-ভাষা তাঁদের কাছে প্রামাণ্য বলে বিবেচিত হতো না। আসলে যে মরুর উদরে আরবি কবিতার জন্ম হয়েছে সেই মরুর মাতৃক্রোড়েই ওই কবিতা লালিত-পালিত হয়ে পরিপুষ্ট হয়েছে। সুতরাং মরু-প্রসূত এই সাহিত্যে মরুর অনিবার্য প্রভাব অনস্বীকার্য। পাশাপাশি লক্ষণীয় যে মরুভূমির প্রাকৃতিক দৃশ্য ও নৈসর্গিক চিত্র অবগাহন ছাড়া যেমন এই সাহিত্যের রস আস্বাদন সম্ভব নয়, তেমনি মরুবাসী বেদুঈনের আর্থসামাজিক অবস্থা অনুধাবন ব্যতিরেকে এর মর্মোদ্ধার প্রায় অসম্ভব। এতে বোঝা যায়, মরু-পরিবেশ ও মরু-সাহিত্য এই দুয়ের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং বলা যায়, প্রাচীন আরবি কবিতার উৎকর্ষ সাধনে মরু-পরিবেশের প্রভাব অত্যন্ত শক্তিশালী।