ঢাকা ০৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলুম-অন্যায়কে বিএনপি প্রশ্রয় দেবে না নাগেশ্বরীতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ পছন্দের বিয়ের বিপক্ষে অধিকাংশ পাকিস্তানি সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাহজালাল বিমানবন্দরে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ গ্রেফতার জেলা গোয়েন্দা শাখা, পাবনার অভিযানে ০৩(তিন) কেজি গাঁজা সহ দুইজন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনার মামলার বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি ,১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি । বেরোবিতে জুলাইয়ে বিপ্লবের বিরোধিতা কারী ক্যাম্পাসে দাপটে চলেন ক্ষমতার উৎস কোথায় মির্জা ফখরুলের স্ট্যাটাস ঘিরে নানা ধরনের আলোচনা

“সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত”

১৯৭১ সালের এই দিনে (৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ শহর হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর ছেড়ে পিছু হটে পাকবাহিনী। হানাদার মুক্ত হয়ে সুনামগঞ্জ শহর ‘জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে মুখরিত হয়। সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে ওড়ে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা। সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসের দিনেই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে পালায় পাক হায়েনারা।

এই ঘটনাটি ছিল সুনামগঞ্জের মুক্তিকামী মানুষের জন্য বেদনাদায়ক। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, তখনকার সময়ের ৫ নম্বর সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ মোতালেব সুনামগঞ্জ সীমান্তের যোগীরগাঁও, ক্যাপ্টেন যাদব সুনামগঞ্জ শহরতলির আমবাড়ী বাজার এলাকা ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ গৌরারং এলাকা হয়ে মুক্তিপাগল সেনাদের নিয়ে জীবন বাজি রেখে ভোরে একযোগে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশী অভিযানের মুখে পালিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। এর আগে ২৭ নভেম্বর পাকসেনারা চারদিক দিয়ে আটঘাট বেঁধে আক্রমণ চালানোর কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে পাশের গোধীগাঁও, নৈদেরখামার ও মীরেরচর এলাকায় এসে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালান। এক পর্যায়ে তৎকালীন মহকুমা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিন এখানে আটকা পড়েন। পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাবার সময় (৬ ডিসেম্বর ১৯৭১) আহসানমারায় তালেবসহ ৩ জনকে একরশি দিয়ে বেঁধে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে ফেলে যায়।

ছাত্রনেতা তালেব উদ্দিন ভালো স্লোগান দিতে পারতেন, তাঁর জয় বাংলা স্লোগান উজ্জীবিত করতো সকলকে। তিনি সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁকে দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় আটক করে পাক হায়েনা ও রাজাকাররা শহরের গলি দিয়ে ঘুরিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তালেব উদ্দিনকে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের টর্চারসেলে এনে নির্যাতন করা হয়েছে। এক পর্যায়ে সুনামগঞ্জ ছেড়ে পালানোর সময় নির্মমভাবে তালেব উদ্দিনকে হত্যা করে পালায় পাকসেনারা।

(৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ মুক্ত হওয়ায় সকলে আনন্দিত হয়ে উল্লাস করলেও তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু সহযোদ্ধাদের কাঁদায়।

আজ(০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ বিভিন্ন সংগঠন সুনামগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে থেকে ট্রাফিক পয়েন্টস্হ র্যালী করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা করেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোঃ মাকসুদ চৌধুরী। জেলা পুলিশ সুপার শাহ মোঃ এহসান।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত,তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল,জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুসুফিয়ান সহ জেলার সব মুক্তিযোদ্ধাগন।
এসময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন,জেলা আওয়ামী লীগের নেতা, হায়দার চৌধুরী লিটন,মোঃ সিরাজুর রহমান সিরাজ সহ প্রমুখ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলুম-অন্যায়কে বিএনপি প্রশ্রয় দেবে না

“সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত”

আপডেট সময় ০৬:১৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

১৯৭১ সালের এই দিনে (৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ শহর হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর ছেড়ে পিছু হটে পাকবাহিনী। হানাদার মুক্ত হয়ে সুনামগঞ্জ শহর ‘জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে মুখরিত হয়। সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে ওড়ে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা। সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসের দিনেই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে পালায় পাক হায়েনারা।

এই ঘটনাটি ছিল সুনামগঞ্জের মুক্তিকামী মানুষের জন্য বেদনাদায়ক। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, তখনকার সময়ের ৫ নম্বর সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ মোতালেব সুনামগঞ্জ সীমান্তের যোগীরগাঁও, ক্যাপ্টেন যাদব সুনামগঞ্জ শহরতলির আমবাড়ী বাজার এলাকা ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ গৌরারং এলাকা হয়ে মুক্তিপাগল সেনাদের নিয়ে জীবন বাজি রেখে ভোরে একযোগে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশী অভিযানের মুখে পালিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। এর আগে ২৭ নভেম্বর পাকসেনারা চারদিক দিয়ে আটঘাট বেঁধে আক্রমণ চালানোর কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে পাশের গোধীগাঁও, নৈদেরখামার ও মীরেরচর এলাকায় এসে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালান। এক পর্যায়ে তৎকালীন মহকুমা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিন এখানে আটকা পড়েন। পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাবার সময় (৬ ডিসেম্বর ১৯৭১) আহসানমারায় তালেবসহ ৩ জনকে একরশি দিয়ে বেঁধে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে ফেলে যায়।

ছাত্রনেতা তালেব উদ্দিন ভালো স্লোগান দিতে পারতেন, তাঁর জয় বাংলা স্লোগান উজ্জীবিত করতো সকলকে। তিনি সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁকে দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় আটক করে পাক হায়েনা ও রাজাকাররা শহরের গলি দিয়ে ঘুরিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তালেব উদ্দিনকে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের টর্চারসেলে এনে নির্যাতন করা হয়েছে। এক পর্যায়ে সুনামগঞ্জ ছেড়ে পালানোর সময় নির্মমভাবে তালেব উদ্দিনকে হত্যা করে পালায় পাকসেনারা।

(৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ মুক্ত হওয়ায় সকলে আনন্দিত হয়ে উল্লাস করলেও তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু সহযোদ্ধাদের কাঁদায়।

আজ(০৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ বিভিন্ন সংগঠন সুনামগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে থেকে ট্রাফিক পয়েন্টস্হ র্যালী করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা করেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জের নবাগত জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোঃ মাকসুদ চৌধুরী। জেলা পুলিশ সুপার শাহ মোঃ এহসান।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত,তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল,জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুসুফিয়ান সহ জেলার সব মুক্তিযোদ্ধাগন।
এসময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন,জেলা আওয়ামী লীগের নেতা, হায়দার চৌধুরী লিটন,মোঃ সিরাজুর রহমান সিরাজ সহ প্রমুখ।