চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার পশ্চিম মুহরা এলাকায় টাকার বিনিময়ে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা দিয়ে নিরপরাধ মা ও ছেলেকে ফাঁসাতে গিয়ে র্যাবের হাতে আটক হয়েছেন ৬ মামলার আসামি আবুল হোসেন (৩৯) নিজেই।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে আটক করা হয়েছে। এ সময় একটি ওয়ান শ্যুটারগান, একটি পাইপগান, এক রাউন্ড কার্তুজ ও ২ হাজার ২৫০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) র্যাব- ৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব জানায়, মো. ইউসুফের প্রথম স্ত্রী নাসরিন আক্তার ও তার ছেলে সোহানের সঙ্গে জমিজমা ও পারিবারিক কলহ রয়েছে দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর আক্তারের। নাসরিন ও সোহানকে ফাঁসানোর জন্য ইউসুফ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর আক্তার পরিকল্পনা করে আবুল হোসেনের সঙ্গে। পরিকল্পনা মোতাবেক অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবা ট্যাবলেট নাসরিনের ঘরে রাখা হয়। যা স্বীকার করেন আবুল হোসেন।
নুরুল আবছার বলেন, আসামি মো. আবুল হোসেন র্যাবকে বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানায়, নাসরিন আক্তারের ঘরে ইয়াবা, অস্ত্র ও গুলি আছে। এগুলো দ্রুত উদ্ধার না করলে সরিয়ে ফেলবে। সংবাদ পেয়ে র্যাবের একটি দল আবুল হোসেন ও অন্যান্যদের নিয়ে নাসরিন আক্তারের ঘরে উপস্থিত হয়। তখন আবুল হোসেন জানায়, ঘরের ফলস ছাদের ওপর অস্ত্র, গুলি ও ওয়ারড্রবে ইয়াবা ট্যাবলেট রয়েছে। তার দেওয়া তথ্য মতে, একটি ওয়ান শ্যুটারগান, একটি পাইপগান, এক রাউন্ড কার্তুজ ও ২ হাজার ২৫০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
উদ্ধার হওয়া অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবার বিষয়ে নাসরিন কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। অভিযানের সময় উপস্থিত স্থানীয়রাও নাসরিনের কথার সঙ্গে বলেন নাসরিন আক্তার ভাল মানুষ। ফলে আবুল হোসেনের দেওয়া সংবাদ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করে বলেন, নাসরিন ও তার ছেলে সোহানের সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে ইউসুফ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর আক্তারের বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জেরে নাসরিন ও তার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য আবুল হোসেনকে নিয়ে পরিকল্পনা করেন ইউসুফ ও তার স্ত্রী কোহিনুর।
তিনি বলেন, আবুল হোসেনের সঙ্গে ইউসুফ ও তার স্ত্রীর একটি গোপন চুক্তি হয়। আবুল হোসেন অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবা সংগ্রহ করে নাসরিন আক্তারের ঘরে রেখে র্যাবকে দিয়ে অভিযান পরিচালনা করাবে। অভিযান শেষ হলে আবুল হোসেনকে কোহিনুর ও ইউসুফ ৩ লাখ টাকা দেবে। পরে চুক্তি অনুযায়ী আবুল হোসেন অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা সংগ্রহ করেন। নাসরিন ও তার ছেলে ঘরে না থাকার সুযোগে গত ৬ সেপ্টেম্বর ইউসুফকে সঙ্গে নিয়ে আবুল হোসেন অস্ত্রগুলো তাদের ঘরে রেখে আসেন।
তবে, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নাসরিন আক্তারের স্বামী ইউসুফ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর আক্তার র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।