ঢাকা ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আগষ্টিনের সহোচর কল্পনা ফলিয়ার যত প্রতারণা হাসিনার বিশ্বস্ত আমলা পাওয়ার গ্রিডের এ.কে. আজাদ এখনও বহাল তবিয়তে নাটোরের অনার্স শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তির দাবিতে ডিসিকে স্মারকলিপি প্রদান ঈশ্বরদীতে উপজেলা যুবদলের উদ্যোগে ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন বাকেরগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ওসির মতবিনিময় আদালতের নির্দেশে আইনি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাশ উত্তোলন বোরহানউদ্দিনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত গোপন তদন্তের মুখে আ.লীগ আমলের পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যাডেট এসআইরাও তদন্তের আওতায় সিলেটে দেড় থেকে ২ কোটি ব্যারেল তেল পাওয়ার সম্ভাবনা রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন না: রিজওয়ানা হাসান

রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এলো মে মাসে

সদ্য বিদায়ী মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যোগের ফলে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রবাসী আয় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের মাস এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার। আর পুরো অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। এক মাস বাকি থাকতেই আগের অর্থবছরের প্রায় সমান রেমিট্যান্স এসেছে। আর গত মে পর্যন্ত বেড়েছে ১৯৬ কোটি ডলার, যা ১০ শতাংশের বেশি। গত এপ্রিলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ২০৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন। আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার। সাধারণভাবে প্রতি বছর ঈদের আগে রেমিট্যান্স বেড়ে থাকে।

জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের সঙ্গে ব্যাংকের দরে পার্থক্য অনেক কমেছে। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স বাড়াতে ব্যাংকগুলো অনেক চেষ্টা করছে। এতে করে রেমিট্যান্স বাড়ছে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলো এখন বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১১৮ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত দরে রেমিট্যান্স কিনছে। প্রবাসীর সুবিধাভোগী পাচ্ছেন ১১৭ টাকা। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনাসহ পাচ্ছেন ১২০ টাকার মতো। আগে ১১০ টাকা দর নির্ধারিত থাকলেও ব্যাংকগুলো ১১৩-১১৫ টাকায় কিনত। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে দর বৃদ্ধির ফলে আমদানিতে খরচ আরও বেড়েছে। এমনিতেই ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির এ সময়ে মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে।

অর্থ পাচার ঠেকানোর কার্যকর উদ্যোগ না নিলে কতদিন রেমিট্যান্স বাড়বে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ব্যাংকারদের মনে। বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, দুর্নীতি বা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা দেশের বাইরে অর্থ নেয়, তাদের কাছে দর কোনো বিষয় না। সুতরাং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে অর্থ পাচার ও হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। তা না করে শুধু দর বাড়ালে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। এ ছাড়া রপ্তানি আয় সময় মতো দেশে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি ঋণসহ বিভিন্নভাবে রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গত ২৯ মে ১৮ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আগের মাস এপ্রিল শেষে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ২১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভের রেকর্ড হয় ২০২১ সালের আগস্টে। নানা উপায়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে। মূলত বেসরকারি খাতে নতুন করে ঋণ না এসে, উল্টো আগের দায় শোধ করতে হচ্ছে। অনেকে আগের বিনিয়োগ ফেরত নিচ্ছে। এসব কারণে আর্থিক হিসাবে গত মার্চ পর্যন্ত ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি হয়েছে। গত অর্থবছর যেখানে ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগে সাধারণত সব সময় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল।

 

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আগষ্টিনের সহোচর কল্পনা ফলিয়ার যত প্রতারণা

রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এলো মে মাসে

আপডেট সময় ১২:৫১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

সদ্য বিদায়ী মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যোগের ফলে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রবাসী আয় ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের মাস এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার। আর পুরো অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। এক মাস বাকি থাকতেই আগের অর্থবছরের প্রায় সমান রেমিট্যান্স এসেছে। আর গত মে পর্যন্ত বেড়েছে ১৯৬ কোটি ডলার, যা ১০ শতাংশের বেশি। গত এপ্রিলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ২০৪ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন। আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার। সাধারণভাবে প্রতি বছর ঈদের আগে রেমিট্যান্স বেড়ে থাকে।

জানতে চাইলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলের সঙ্গে ব্যাংকের দরে পার্থক্য অনেক কমেছে। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স বাড়াতে ব্যাংকগুলো অনেক চেষ্টা করছে। এতে করে রেমিট্যান্স বাড়ছে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলো এখন বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১১৮ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত দরে রেমিট্যান্স কিনছে। প্রবাসীর সুবিধাভোগী পাচ্ছেন ১১৭ টাকা। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ সরকারি প্রণোদনাসহ পাচ্ছেন ১২০ টাকার মতো। আগে ১১০ টাকা দর নির্ধারিত থাকলেও ব্যাংকগুলো ১১৩-১১৫ টাকায় কিনত। রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে দর বৃদ্ধির ফলে আমদানিতে খরচ আরও বেড়েছে। এমনিতেই ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির এ সময়ে মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে।

অর্থ পাচার ঠেকানোর কার্যকর উদ্যোগ না নিলে কতদিন রেমিট্যান্স বাড়বে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ব্যাংকারদের মনে। বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, দুর্নীতি বা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা দেশের বাইরে অর্থ নেয়, তাদের কাছে দর কোনো বিষয় না। সুতরাং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে অর্থ পাচার ও হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। তা না করে শুধু দর বাড়ালে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। এ ছাড়া রপ্তানি আয় সময় মতো দেশে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি ঋণসহ বিভিন্নভাবে রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গত ২৯ মে ১৮ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আগের মাস এপ্রিল শেষে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গত ডিসেম্বর শেষে ছিল ২১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার। এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভের রেকর্ড হয় ২০২১ সালের আগস্টে। নানা উপায়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পরও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করছে। মূলত বেসরকারি খাতে নতুন করে ঋণ না এসে, উল্টো আগের দায় শোধ করতে হচ্ছে। অনেকে আগের বিনিয়োগ ফেরত নিচ্ছে। এসব কারণে আর্থিক হিসাবে গত মার্চ পর্যন্ত ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি হয়েছে। গত অর্থবছর যেখানে ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগে সাধারণত সব সময় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল।