ঢাকা ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ভোলায় অপ-চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু; চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

  • ভোলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় ১০:৩৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২
  • ৬০৮ বার পড়া হয়েছে

৭ মাসের শিশু সামিয়ার গলায় উঠে একটি বিষফোঁড়া। চিকিৎসার জন্য দাদা আব্দুল সাদেক নাতনি সামিয়াকে নিয়ে ভোলা শহরের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। চিকিৎসক সামিয়ার ফোঁড়া দেখে তা চিকিৎসার মাধ্যমে সারতে পারবেন বলে জানায়।

তাঁর আশ্বাসে শুরু হয় চিকিৎসা। একপর্যায়ে শিশুটির শরীরে পুশ করা হয় তিনটি ইনজেকশন। শরীরে ইনজেকশন পুশ করার পরপরই শিশুটির শরীরে নীল বর্ণ ধারণ করে। তা দেখে তাড়াহুড়ো করে ব্লেড দিয়ে কেটে ফোঁড়ার চিকিৎসা চালান ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজারের ইসলামিয়া মেডিকেল হলের পল্লী চিকিৎসক মো. হোসেন (৪৬)। চিকিৎসার একপর্যায়ে মারা যায় সামিয়া।

এরপর কৌশলে দোকান থেকে পালিয়ে যায় কথিত ওই চিকিৎসক। শনিবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার ইসলামিয়া মেডিকেল হলের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর গতকাল রোববার ৬ নভেম্বর বিকেলে কথিত ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভোলা সদর মডেল থানায় চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যু আইনে একটি মামলা দায়ের করেন শিশুটির পিতা আল-আমীন। পুলিশ বলছে, ঘটনাটির সুষ্ঠ তদন্ত চলমান রয়েছে। সামিয়া ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আল-আমীন ও সোহানা দম্পতির মেয়ে।

শিশুটির দাদা আব্দুল সাদেক মা সোহানা বেগম ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সামিয়াকে নিয়ে কথিত ওই ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে তিনি সামিয়াকে ভোলা না নিয়ে তাঁর কাছে কম খরচে চিকিৎসা করাতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু চিকিৎসক পরপর তিনটি ইনজেকশন সামিয়ার শরীরে পুশ করতেই তাঁর পুরো শরীর নীল আকার ধারণ করে। এরপর ব্লেড দিয়ে তাঁর ফোঁড়ার জায়গা কাটা শুরু করলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর শিশুটির পরিবারকে তাঁরা মামলা না করার জন্য অনুরোধ জানান। হোসেনের জামাতা একই উপজেলার ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের রাস্তার মাথা বাজারের আল-কারীম মেডিকেল হলের পল্লী চিকিৎসক তারেকসহ তাঁরা বেশ কয়েকজন সামিয়ার বাবা ও দাদাকে ঘটনাটি টাকার বিনিময়ে সমাধানে যেতে অনুরোধ জানান। ঘটনাটি দামাচাপার বিষয়ে জানতে চাইলে, হোসেনের জামাতা তারেক কৌশলে তাঁর ফার্মেসি বন্ধ করে চলে যান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইমাম হোসেন জানান, মামলা দায়েরের পর ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ দুপুরে তিনি হোসেনের ইসলামিয়া মেডিকেল হলে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষ করেছেন। ঘটনাটির আরও তদন্ত চলমান রয়েছে। ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, শিশুটির ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত শেষে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

ভোলায় অপ-চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যু; চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় ১০:৩৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০২২

৭ মাসের শিশু সামিয়ার গলায় উঠে একটি বিষফোঁড়া। চিকিৎসার জন্য দাদা আব্দুল সাদেক নাতনি সামিয়াকে নিয়ে ভোলা শহরের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। চিকিৎসক সামিয়ার ফোঁড়া দেখে তা চিকিৎসার মাধ্যমে সারতে পারবেন বলে জানায়।

তাঁর আশ্বাসে শুরু হয় চিকিৎসা। একপর্যায়ে শিশুটির শরীরে পুশ করা হয় তিনটি ইনজেকশন। শরীরে ইনজেকশন পুশ করার পরপরই শিশুটির শরীরে নীল বর্ণ ধারণ করে। তা দেখে তাড়াহুড়ো করে ব্লেড দিয়ে কেটে ফোঁড়ার চিকিৎসা চালান ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজারের ইসলামিয়া মেডিকেল হলের পল্লী চিকিৎসক মো. হোসেন (৪৬)। চিকিৎসার একপর্যায়ে মারা যায় সামিয়া।

এরপর কৌশলে দোকান থেকে পালিয়ে যায় কথিত ওই চিকিৎসক। শনিবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার ইসলামিয়া মেডিকেল হলের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর গতকাল রোববার ৬ নভেম্বর বিকেলে কথিত ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভোলা সদর মডেল থানায় চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যু আইনে একটি মামলা দায়ের করেন শিশুটির পিতা আল-আমীন। পুলিশ বলছে, ঘটনাটির সুষ্ঠ তদন্ত চলমান রয়েছে। সামিয়া ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আল-আমীন ও সোহানা দম্পতির মেয়ে।

শিশুটির দাদা আব্দুল সাদেক মা সোহানা বেগম ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সামিয়াকে নিয়ে কথিত ওই ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে তিনি সামিয়াকে ভোলা না নিয়ে তাঁর কাছে কম খরচে চিকিৎসা করাতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু চিকিৎসক পরপর তিনটি ইনজেকশন সামিয়ার শরীরে পুশ করতেই তাঁর পুরো শরীর নীল আকার ধারণ করে। এরপর ব্লেড দিয়ে তাঁর ফোঁড়ার জায়গা কাটা শুরু করলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর শিশুটির পরিবারকে তাঁরা মামলা না করার জন্য অনুরোধ জানান। হোসেনের জামাতা একই উপজেলার ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের রাস্তার মাথা বাজারের আল-কারীম মেডিকেল হলের পল্লী চিকিৎসক তারেকসহ তাঁরা বেশ কয়েকজন সামিয়ার বাবা ও দাদাকে ঘটনাটি টাকার বিনিময়ে সমাধানে যেতে অনুরোধ জানান। ঘটনাটি দামাচাপার বিষয়ে জানতে চাইলে, হোসেনের জামাতা তারেক কৌশলে তাঁর ফার্মেসি বন্ধ করে চলে যান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইমাম হোসেন জানান, মামলা দায়েরের পর ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ দুপুরে তিনি হোসেনের ইসলামিয়া মেডিকেল হলে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষ করেছেন। ঘটনাটির আরও তদন্ত চলমান রয়েছে। ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, শিশুটির ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত শেষে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।