দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) কত দামে বিক্রি হবে তা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। প্রতিমাসের প্রথম দিকে মূল্য সমন্বয়ের ঘোষণা করা হয়। পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় সেপ্টেম্বর মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু তা হঠাৎ স্থগিত করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে এটি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে বিইআরসি। বিইআরসি সচিব ব্যারিস্টার খলিলুর রহমান খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সৌদি আরামকো ঘোষিত সেপ্টেম্বর মাসের সৌদি সিপি অনুযায়ী এ মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজির মূল্যহার সমন্বয়ের বিষয়ে কমিশন আদেশ ঘোষণার জন্য অনুষ্ঠেয় ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিং অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে। বর্ণিত ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ের তারিখ ও সময় যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো হবে।
এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে প্রতি মাসে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি। এর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় গত আগস্টে এলপিজির দাম কেজিতে প্রায় ৩ টাকা কমানো হয়েছিল।
ওই দামেই এখন পর্যন্ত চলমান আছে, সেই হিসেবে সাড়ে ৫ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডারের দাম ৫৫৯ টাকা, ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম ১২১৯ টাকা, সাড়ে ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের দাম ১২৭১ টাকা, ১৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৫২৪ টাকা, ১৬ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১৬২৬ টাকা নির্ধারণ করা আছে। এছাড়া ১৮ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৮২৯ টাকা, ২০ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২০৩৩ টাকা, ২২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২২৩৬ টাকা, ২৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ২৫৩৯ টাকা, ৩০ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৩০৪৯ টাকা, ৩৩ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৩৩৫৪ টাকা, ৩৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৩৫৫৫ টাকা এবং ৪৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৪৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আগস্টে কমলেও জুলাই মাসে এলপিজির দাম বেড়েছিল কেজিতে ১ টাকা। আরও আগে গত ৫ মে এলপিজির দাম কমিয়েছিল বিইআরসি। সেই সময় ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজি মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল এক হাজার ৩৩৫ টাকা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলপিজি দাম সমন্বয় করা হলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম মানে না ব্যবসায়ীরা। খুচরা পর্যায়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দেড়শ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয় প্রতিটি এলপিজি সিলিন্ডার। ফলে এলপিজি ব্যবহারে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাকে আর মুনাফা লুটছে কোম্পানি, ডিলার আর খুচরা ব্যবসায়ীরা।