ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল সাংবাদিক নূরুল কবিরকে বিমানবন্দরে হয়রানি, জামায়াতের উদ্বেগ নয়াদিল্লির প্রেস মিনিস্টার হলেন দুই সাংবাদিক ঐক্যকে রাখতে হবে ইস্পাত কঠিন অটুট: জামায়াত আমির হাসিনার বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও কেন বিমান পাঠায়নি ভারত শপথ নিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিলের সিদ্ধান্ত আবারো চেম্বারের সভাপতি নির্বাচিত আব্দুল ওয়াহেদ মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার

 নওগাঁ বিভিন্ন গ্রামে হাট- বাজারে ভোজনরসিক হিসেবে বিশ্বজুড়ে সুনাম রয়েছে বাঙালির। সুস্বাদু ও মুখরোচক হওয়ায় বিশ্বব্যাপী সমাদৃত গ্রাম-বাংলার খাবার। তেমনই কিছু মুখরোচক খাবার কটকটি, বাতাসা, তিলের খাজা, চানাচুর, জিলাপি, বালুসা, খুরমা ও খাস্তা। কয়েক দশক আগেওগ্রামের হাট-বাজারে এসব খাবারের পসরা সাজিয়ে বসতেন ব্যবসায়ীরা।

শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার কাছেই প্রিয় এসব মুখরোচক খাবার। তবে কালের বিবর্তনে পাল্টে গেছে গ্রাম-বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্য। আধুনিকতার ছোঁয়ায় শৈশবের স্মৃতি থেকে মুছে যেতে বসেছে গ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে থাকা হাট-বাজার। সরেজমিনে নওগাঁ জেলার ধামইরহাটের হাটে গিয়ে দেখা গেছে, এখনো হারিয়ে এসব খাবারের চল অল্পমাত্রায় হলেও টিকে আছে। দূর-দূরান্ত থেকে মাছ, মাংস ও সবজি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি হয়েছে এসব মুখরোচক খাবারের দোকান। দুপুরের পর থেকে বাবা-দাদাদের হাত ধরে শিশুরাও হাটে আসছে।

শিশুদের উপচে পড়া ভিড়ে বিক্রি বেড়েছে ক্রেতাদের। বাজার ঘুরে জানা গেল, বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মজাদার খাবার। ছোট-বড় নিমকি ১৪০ টাকা কেজি, ভাজা মটর কালাই ২০০ টাকা কেজি, কটকটি ২০০ টাকা কেজি, গুড় ও চিনি দিয়ে তৈরি খুরমা ২০০ টাকা কেজি, বাদাম ২০০ টাকা, চানাচুর ২০০ টাকা, পিয়াজু ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তারা। ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে দুপুরের পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নিমকি, পুরি, পিয়াজু, বাতাসা, বালুসা, জাম, চানাচুর, খুরমা, খাস্তা, কটকটি ও জিলাপিসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার নিজ হাতে তৈরি করেন তারা। তারপর সেগুলো গ্রামের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন। উপজেলার রামরামপুর এলাকা থেকে আসা বৃদ্ধ তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘নাতি হাটে আসার জন্য বায়না করেছিল ।

তাই সাইকেলের ক্যারিয়ারে বসিয়ে তাকে হাটে নিয়ে এসেছি। কটকটি, গুড় ও চিনি খুরমা, বালুসা, চানাচুর ও জিলাপি শহরে পাওয়া যায় না, তাই ওকে এখানে নিয়ে এসেছি।’

উপজেলার হরিতকী ডাঙ্গা এলাকার কটকটি ও চানাচুর ব্যবসায়ী মো. আতোয়ার হোসেন  জানান, প্রায় ৪৫ বছর ধরে বাবার সঙ্গে থেকে তিনি এই ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এতদিন এসব খাবার বিক্রি করে তার সংসার দিব্যি চলত। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি লাভও কমে গেছে। তবুও দাদার ঐতিহ্যকে টিকেয়ে রেখেছেন তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মুখরোচক খাবার

আপডেট সময় ০৫:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০২২

 নওগাঁ বিভিন্ন গ্রামে হাট- বাজারে ভোজনরসিক হিসেবে বিশ্বজুড়ে সুনাম রয়েছে বাঙালির। সুস্বাদু ও মুখরোচক হওয়ায় বিশ্বব্যাপী সমাদৃত গ্রাম-বাংলার খাবার। তেমনই কিছু মুখরোচক খাবার কটকটি, বাতাসা, তিলের খাজা, চানাচুর, জিলাপি, বালুসা, খুরমা ও খাস্তা। কয়েক দশক আগেওগ্রামের হাট-বাজারে এসব খাবারের পসরা সাজিয়ে বসতেন ব্যবসায়ীরা।

শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার কাছেই প্রিয় এসব মুখরোচক খাবার। তবে কালের বিবর্তনে পাল্টে গেছে গ্রাম-বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্য। আধুনিকতার ছোঁয়ায় শৈশবের স্মৃতি থেকে মুছে যেতে বসেছে গ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে থাকা হাট-বাজার। সরেজমিনে নওগাঁ জেলার ধামইরহাটের হাটে গিয়ে দেখা গেছে, এখনো হারিয়ে এসব খাবারের চল অল্পমাত্রায় হলেও টিকে আছে। দূর-দূরান্ত থেকে মাছ, মাংস ও সবজি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি হয়েছে এসব মুখরোচক খাবারের দোকান। দুপুরের পর থেকে বাবা-দাদাদের হাত ধরে শিশুরাও হাটে আসছে।

শিশুদের উপচে পড়া ভিড়ে বিক্রি বেড়েছে ক্রেতাদের। বাজার ঘুরে জানা গেল, বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মজাদার খাবার। ছোট-বড় নিমকি ১৪০ টাকা কেজি, ভাজা মটর কালাই ২০০ টাকা কেজি, কটকটি ২০০ টাকা কেজি, গুড় ও চিনি দিয়ে তৈরি খুরমা ২০০ টাকা কেজি, বাদাম ২০০ টাকা, চানাচুর ২০০ টাকা, পিয়াজু ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তারা। ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে দুপুরের পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে যায়।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী নিমকি, পুরি, পিয়াজু, বাতাসা, বালুসা, জাম, চানাচুর, খুরমা, খাস্তা, কটকটি ও জিলাপিসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার নিজ হাতে তৈরি করেন তারা। তারপর সেগুলো গ্রামের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন। উপজেলার রামরামপুর এলাকা থেকে আসা বৃদ্ধ তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘নাতি হাটে আসার জন্য বায়না করেছিল ।

তাই সাইকেলের ক্যারিয়ারে বসিয়ে তাকে হাটে নিয়ে এসেছি। কটকটি, গুড় ও চিনি খুরমা, বালুসা, চানাচুর ও জিলাপি শহরে পাওয়া যায় না, তাই ওকে এখানে নিয়ে এসেছি।’

উপজেলার হরিতকী ডাঙ্গা এলাকার কটকটি ও চানাচুর ব্যবসায়ী মো. আতোয়ার হোসেন  জানান, প্রায় ৪৫ বছর ধরে বাবার সঙ্গে থেকে তিনি এই ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এতদিন এসব খাবার বিক্রি করে তার সংসার দিব্যি চলত। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি লাভও কমে গেছে। তবুও দাদার ঐতিহ্যকে টিকেয়ে রেখেছেন তিনি।