রাজধানীর ওয়াসার পানিতে আর ভর্তুকি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। রাজধানীতে জোনভিত্তিক পানির দাম নির্ধারণ করে বস্তিতে বসবাসরত নিম্ন আয়ের মানুষকে কম দামে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মিলনায়তনে সিটি রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘নগর সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষই বিত্তবান। গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে সেই টাকা দিয়ে ধনীদের ভর্তুকি দেওয়া নৈতিকভাবে কতটা সমর্থনযোগ্য? গুলশান-বনানীতে বসবাসকারী যে হারে পানির বিল দেন বস্তিতে থাকা অথবা যাত্রাবাড়িতে থাকা মানুষ কেন সমান পানির মূল্য পরিশোধ করবে?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ঢাকায় জোন ভিত্তিক পানির দাম আলাদা করে বাড়ানো হবে। গুলশান-বনানীর অভিজাত এলাকায় পানির দাম বেশি থাকবে। নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাসরত এলাকায় পানির দাম অপেক্ষাকৃত কম থাকবে। তবে ঢাকা শহরে পানিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে না।’ শুধু পানি নয় হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের মূল্য জোনভিত্তিক নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় মানুষ ভালো আছে। এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ায় খাদ্য-পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে যে কারণে মানুষ অসুবিধায় আছে। সরকার এটা অস্বীকার করছে না। বরং মানুষকে ভালো রাখার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তার সবই করছে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশ বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে। এটা না বলে সরকারের ব্যর্থতার কারণে শুধু যদি বাংলাদেশের মানুষ খারাপ আছে এটা বলা কতটা যৌক্তিক। এটা বলে কি মানুষের ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে না।
তাজুল ইসলাম বলেন, অনেক পরিশ্রমের ফলে ড্যাপ গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এখন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ঢাকাকে বাসযোগ্য, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ অনেক দেশের তুলনায় আমরা সফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে এই সফলতা অর্জিত হয়েছে।
সিটি রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আদিলুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব দীপ আজাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু প্রমুখ।