ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিঠাপুকুরে কিশোরী ধর্ষণের শিকার

রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ৭ম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে ভিন্নকৌশলে অসামাজিক কার্যকলাপের ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে অভিযুক্ত লেবু মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের এমদাদুল মিয়া ওরফে এন্দার ছেলে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মিয়ারহাট নামক বাজারে লেবু মিয়ার একটি কসমেটিকস অ্যান্ড কম্পিউটারের দোকান আছে। ওই বাজারের পাশে একটি প্রাইভেট সেন্টারে পড়াশোনা করতে যেতেন উক্ত ছাত্রী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী মেয়ে। ১২ বছর বয়সি ওই ছাত্রী প্রায় ৩ মাস আগে প্রাইভেট পড়া শেষে বান্ধবীদের সাথে লেবু মিয়ার কসমেটিকের দোকানে গেলে দোকানদার লেবু মিয়া ওই ছাত্রীর উপর কু-নজর পড়ে। সে সুযোগ বুঝে মেয়েটিকে তার দোকানের ভিতরে ডেকে নিয়ে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয় এবং জোরপূর্বক চুমু খায়, এমনকি সে কৌশলে ভিডিও ধারণ করে রাখে। এরপর সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে আবারও তার দোকানে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং আবারও ভিডিও ধারণ করে রাখে। এভাবেই ওই কিশোরীকে ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কসমেটিকস ব্যবসায়ী লেবু মিয়া । সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেলে ওই ছাত্রী প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে লেবু ওই কিশোরীর ভিডিও ডিলেট করার আশ্বাস দিয়ে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেদিন প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির সুযোগ নিয়ে সারারাত ধরে ওই ছাত্রীর উপর নির্মম নির্যাতন চালায়।

এদিকে মেয়েকে না পেয়ে সারারাত ধরে খুঁজতে থাকে তার স্বজনরা। বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লে পরদিন সকালে বিকল্প পথে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয় ধর্ষক লেবু। এরপর নির্যাতনের শিকার শিশুটির কাছে সারারাত কোথায় ছিল জানতে চাইলে মেয়েটি পরিবারের লোকজনকে সবকিছু খুলে বললে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করা হলে ধর্ষক লেবু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, মেয়েটি অবুঝ সবেমাত্র ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তার সাথে বাবার বয়সি লেবু মিয়া যে নির্যাতন চালিয়েছে তা অমানবিক। তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত যাতে কেউ আর এমন জঘন্য কাজ করার সাহস না পায়। একটা দোকানদার হয়েও যদি এমন কাজ করে তাহলে আমাদের মেয়েরা নিরাপদ কোথায়। আমরা ধর্ষক লেবুর কঠিন শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা জানান, একজন বাবা হয়ে মেয়ের এমন ঘটনা আমার ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে ছোট অবুঝ আমি এর কঠিন বিচার চাই। মামলা করার পর লেবুর লোকজন নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমাদের গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। আমরা গরিব। ন্যায্য বিচারের জন্য পুলিশসহ সকলের সহযোগিতা চাই।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ওসি (অপারেশন) আবু বক্কর সিদ্দিক দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথেই লেবু মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মেয়েটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য।নিয়মিত একটি মামলা হয়েছে মামলা নাম্বার ৪৯ তারিখ ১৭-৬২৩, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ৯(১)অভিযুক্তকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিঠাপুকুরে কিশোরী ধর্ষণের শিকার

আপডেট সময় ০৬:১৭:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩

রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ৭ম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে ভিন্নকৌশলে অসামাজিক কার্যকলাপের ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে অভিযুক্ত লেবু মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের এমদাদুল মিয়া ওরফে এন্দার ছেলে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের মিয়ারহাট নামক বাজারে লেবু মিয়ার একটি কসমেটিকস অ্যান্ড কম্পিউটারের দোকান আছে। ওই বাজারের পাশে একটি প্রাইভেট সেন্টারে পড়াশোনা করতে যেতেন উক্ত ছাত্রী স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরী মেয়ে। ১২ বছর বয়সি ওই ছাত্রী প্রায় ৩ মাস আগে প্রাইভেট পড়া শেষে বান্ধবীদের সাথে লেবু মিয়ার কসমেটিকের দোকানে গেলে দোকানদার লেবু মিয়া ওই ছাত্রীর উপর কু-নজর পড়ে। সে সুযোগ বুঝে মেয়েটিকে তার দোকানের ভিতরে ডেকে নিয়ে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয় এবং জোরপূর্বক চুমু খায়, এমনকি সে কৌশলে ভিডিও ধারণ করে রাখে। এরপর সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে আবারও তার দোকানে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং আবারও ভিডিও ধারণ করে রাখে। এভাবেই ওই কিশোরীকে ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কসমেটিকস ব্যবসায়ী লেবু মিয়া । সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেলে ওই ছাত্রী প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে লেবু ওই কিশোরীর ভিডিও ডিলেট করার আশ্বাস দিয়ে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেদিন প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির সুযোগ নিয়ে সারারাত ধরে ওই ছাত্রীর উপর নির্মম নির্যাতন চালায়।

এদিকে মেয়েকে না পেয়ে সারারাত ধরে খুঁজতে থাকে তার স্বজনরা। বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়লে পরদিন সকালে বিকল্প পথে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয় ধর্ষক লেবু। এরপর নির্যাতনের শিকার শিশুটির কাছে সারারাত কোথায় ছিল জানতে চাইলে মেয়েটি পরিবারের লোকজনকে সবকিছু খুলে বললে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করা হলে ধর্ষক লেবু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, মেয়েটি অবুঝ সবেমাত্র ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তার সাথে বাবার বয়সি লেবু মিয়া যে নির্যাতন চালিয়েছে তা অমানবিক। তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত যাতে কেউ আর এমন জঘন্য কাজ করার সাহস না পায়। একটা দোকানদার হয়েও যদি এমন কাজ করে তাহলে আমাদের মেয়েরা নিরাপদ কোথায়। আমরা ধর্ষক লেবুর কঠিন শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।

মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা জানান, একজন বাবা হয়ে মেয়ের এমন ঘটনা আমার ভিতরটা দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে। আমার মেয়ে ছোট অবুঝ আমি এর কঠিন বিচার চাই। মামলা করার পর লেবুর লোকজন নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমাদের গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে। আমরা গরিব। ন্যায্য বিচারের জন্য পুলিশসহ সকলের সহযোগিতা চাই।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ওসি (অপারেশন) আবু বক্কর সিদ্দিক দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথেই লেবু মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মেয়েটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য।নিয়মিত একটি মামলা হয়েছে মামলা নাম্বার ৪৯ তারিখ ১৭-৬২৩, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ৯(১)অভিযুক্তকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।