ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, এনেক্সকো টাওয়ারের প্রতিটি দোকানেই নির্ধারিত সীমার চেয়ে অতিরিক্ত পণ্য মজুত ছিল। যে কারণে আগুন স্থায়ীভাবে নেভানো যাচ্ছে না। তবে পুরো পরিস্থিতিই আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফের আগুনের সূত্রপাত হওয়ার আশঙ্কা নেই।
বুধবার (৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের সার্বিক অবস্থা এবং ফায়ার সার্ভিসের বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ের সময় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গতকাল সারাদিন এবং সারারাত পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করেছেন এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। তবে দোকানগুলোতে অতিরিক্ত পণ্য মজুতের কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে। তারা আগুনের উৎসের কাছাকাছি যেতে পারছেন না। এজন্য কিছুটা সময় লাগছে। যে কারণে মাঝেমধ্যেই ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।
‘মূলত এই ভবনে মালামাল মজুতের ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম-নীতি মানা প্রয়োজন ছিল সেটি সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। তবে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা আগুন বাড়তে দিচ্ছি না।’
ফায়ার সার্ভিসের আহত আট ফায়ার ফাইটারের সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ৮ জনের মধ্যে ৬ জন সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। তবে দুজন এখনও শঙ্কামুক্ত হননি। মানুষের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে একজন কণ্ঠনালীতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক। আপনাদের কাজ করতে গিয়েই আমরা আহত হচ্ছি। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
এখনো ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এই জায়গায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়েছে পানি স্বল্পতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের পুকুরে ১৪টি পাম্প সেট করে পানি আনতে হয়েছে। এছাড়া আর অন্য কোথাও থেকে পানি আনা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরো কয়েকটি মার্কেটে। সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও অ্যানেক্সকো ভবন থেকে এখনও মাঝেমধ্যে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আগুনে প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।