ঢাকা ০২:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মঠবাড়িয়ায় বীর নিবাস নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বীর নিবাস নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে, কষ্টে কান্না থামছেনা মুক্তিযোদ্ধা আঃ হালিমের।সরজমিনে গিয়ে জানাযায় উপজেলার অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মোল্লা। বীর নিবাস পেয়েছেন তিনি।কিন্তু নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির রাহু গ্রাসে হতবাক তিনি। উপজেলা নির্বাহীর কাছে দেওয়া হয়েছে লিখিত অভিযোগ।

সুফল না মেললেও বন্ধ রাখা হয়েছে নির্মাণ কাজ। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেছেন-যে পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে তা আবার ভেঙ্গে নতুনভাবে করা হতে পারে। গত সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বিভাগীয় উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর রহমান এ বীর নিবাসটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।এ সময় মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার সাথে ছিলেন। অস্বচ্ছল এ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির অভিযোগ,বীর মুক্তিযোদ্ধা হালিম মোল্লার অসুস্থতার সুযোগে যেনতেনভাবে বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন।মাটির নিচে আড়াই ফুট গাঁথুনি দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৫ ইঞ্চি গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে।এখন লিংটেল পর্যন্ত করা নির্মাণ কাজ ভেঙে নতুনভাবে করতে হবে।সরেজমিনে এসে এমন কথাই জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী জিয়ারুল হোসেন। মাটির নিচের অংশে গাঁথুনি ২০ ইঞ্চির পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে ১০ ইঞ্চি।ব্রিক ওয়ালের শুরুতে ৩ ইঞ্চি সিসির পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে আধা ইঞ্চি। বালি ও সিমেন্ট ১ঃ৪ ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে ১ঃ৯ অনুপাতে। ড্যাম প্রুভ (ডিপিসি) না দিয়েই পিড়া তৈরি করা হয়েছে।

রড ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে লিংটেল।শুধুমাত্র জানালার উপরের লিংটেলে কোন রকম রড ব্যবহার করা হয়েছে।পুরানো পোতায় স্যান্ড ফিলিং প্রয়োজন হয়নি।পোতার ভিতরে সাড়ে ৪ ফুটের স্থলে ১৫ ইঞ্চি ব্রিক ওয়ালের গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে। গত বছরের কোরবানিতে কাজ শুরু হয়েছে। এখন অনিয়মের জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী।তিনি অনিয়মের সত্যতা পেয়েছেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঠিকাদারের সুরে দায়সারা কিছু কথা বলেই সান্ত্বনা দেন ভুক্তভোগীদের। এদিকে অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মোল্লা অসুস্থতার কারনে শয্যাশায়ী রয়েছেন।

বিছানা থেকে হাত ধরে নামাতে হয় আবার হাত ধরে উঠাতে হয়। নতুন কোন লোক দেখলেই হাউমাউ করে কেঁদে দেন।মৃত্যুর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বীর নিবাস দেখতে চান তিনি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, দাউদখালী ইউনিয়নের খায়ের ঘটিচোরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মোল্লার নামে বরাদ্দকৃত এ বীর নিবাসটির কাজ করেছেন মিজান ফরাজী।তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম এড়িয়ে যান তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক মিজান ফরাজী জানান,পিআইও মিলন তালুকদার বীর মুক্তিযোদ্ধা হালিম তালুকদারের বীর নিবাসের কাজ শুরু করতে বলেছেন।খুব শীঘ্রই পুনরায় কাজ শুরু করা হবে। উপজেলা পর্যায়ে বীর নিবাস বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঊর্মি ভৌমিককে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মঠবাড়িয়ায় বীর নিবাস নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় ০২:৩৮:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বীর নিবাস নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে, কষ্টে কান্না থামছেনা মুক্তিযোদ্ধা আঃ হালিমের।সরজমিনে গিয়ে জানাযায় উপজেলার অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মোল্লা। বীর নিবাস পেয়েছেন তিনি।কিন্তু নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির রাহু গ্রাসে হতবাক তিনি। উপজেলা নির্বাহীর কাছে দেওয়া হয়েছে লিখিত অভিযোগ।

সুফল না মেললেও বন্ধ রাখা হয়েছে নির্মাণ কাজ। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেছেন-যে পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে তা আবার ভেঙ্গে নতুনভাবে করা হতে পারে। গত সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের বিভাগীয় উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর রহমান এ বীর নিবাসটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।এ সময় মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার সাথে ছিলেন। অস্বচ্ছল এ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির অভিযোগ,বীর মুক্তিযোদ্ধা হালিম মোল্লার অসুস্থতার সুযোগে যেনতেনভাবে বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন।মাটির নিচে আড়াই ফুট গাঁথুনি দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৫ ইঞ্চি গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে।এখন লিংটেল পর্যন্ত করা নির্মাণ কাজ ভেঙে নতুনভাবে করতে হবে।সরেজমিনে এসে এমন কথাই জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী জিয়ারুল হোসেন। মাটির নিচের অংশে গাঁথুনি ২০ ইঞ্চির পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে ১০ ইঞ্চি।ব্রিক ওয়ালের শুরুতে ৩ ইঞ্চি সিসির পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে আধা ইঞ্চি। বালি ও সিমেন্ট ১ঃ৪ ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে ১ঃ৯ অনুপাতে। ড্যাম প্রুভ (ডিপিসি) না দিয়েই পিড়া তৈরি করা হয়েছে।

রড ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে লিংটেল।শুধুমাত্র জানালার উপরের লিংটেলে কোন রকম রড ব্যবহার করা হয়েছে।পুরানো পোতায় স্যান্ড ফিলিং প্রয়োজন হয়নি।পোতার ভিতরে সাড়ে ৪ ফুটের স্থলে ১৫ ইঞ্চি ব্রিক ওয়ালের গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে। গত বছরের কোরবানিতে কাজ শুরু হয়েছে। এখন অনিয়মের জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী।তিনি অনিয়মের সত্যতা পেয়েছেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঠিকাদারের সুরে দায়সারা কিছু কথা বলেই সান্ত্বনা দেন ভুক্তভোগীদের। এদিকে অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মোল্লা অসুস্থতার কারনে শয্যাশায়ী রয়েছেন।

বিছানা থেকে হাত ধরে নামাতে হয় আবার হাত ধরে উঠাতে হয়। নতুন কোন লোক দেখলেই হাউমাউ করে কেঁদে দেন।মৃত্যুর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বীর নিবাস দেখতে চান তিনি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, দাউদখালী ইউনিয়নের খায়ের ঘটিচোরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম মোল্লার নামে বরাদ্দকৃত এ বীর নিবাসটির কাজ করেছেন মিজান ফরাজী।তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম এড়িয়ে যান তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক মিজান ফরাজী জানান,পিআইও মিলন তালুকদার বীর মুক্তিযোদ্ধা হালিম তালুকদারের বীর নিবাসের কাজ শুরু করতে বলেছেন।খুব শীঘ্রই পুনরায় কাজ শুরু করা হবে। উপজেলা পর্যায়ে বীর নিবাস বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঊর্মি ভৌমিককে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।