অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে বর্ধিতমূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীর মিরপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর ১ নম্বর থেকে শুরু হয়ে শাহ আলী অতিক্রম প্রদক্ষিণ করে গাবতলীতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই দেশর এই ক্রান্তিকালে সম্পূর্ণ অবিবেচনাপ্রসূত এবং অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করে গণবিরোধী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরকারকে ফ্যাসিবাদী দাবি করে তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে ২০১০ সাল থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ১০ বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১০ সালের মার্চে প্রথম বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। পরের বছর ২০১১ সালে গ্রাহক পর্যায়ে দুই দফা বাড়ানো হয়েছিল। ২০১২ সালেও খুচরা বিদ্যুতের দাম দুই দফা বাড়ানো হয়। এরপর ২০১৪ সালের মার্চে বিদ্যুতের দাম ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট করা হয় ৬ টাকা ১৫ পয়সা। আর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তা ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয় ৬ টাকা ৩৩ পয়সা।
এদিকে ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালের মার্চে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় মূল্যহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এরপর গত ১২ জানুয়ারি সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যা ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হয়েছে। এতে ইউনিটপ্রতি দাম বাড়বে ৩৫ পয়সা। ফলে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়ে গড়ে দাঁড়াবে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা। যা রীতিমত জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণ করা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী জুলম-নির্যাতন ও দলন-পীড়ন চালিয়ে অতীতে কোনও আদর্শবাদী শক্তিকে নির্মূল করা যায়নি; আর কখনো যাবেও না। তিনি সরকারকে নেতিবাচক, ধ্বংসাত্মক ও গণবিরোধী রাজনীতি বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহবান জানান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, নাসির উদ্দীন ও শাহ আলম তুহিন, শূরা সদস্য ডা. মঈন উদ্দীন, আব্দুল মতিন খান, আব্দুল মান্নান ও সাইফুল কাদের ও ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান প্রমুখ।