ঢাকা ০২:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ, মৌ মৌ করছে প্রকৃতি-রামগঞ্জে গাছে গাছে আমের মুকুল॥

‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ…।’ পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে।

গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজছে শীতের বিদায়ী ঘণ্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। গাছে গাছে ফুলের মুকুল বার্তা দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের। কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতালে ফাগুনের উত্তাল বাসন্তী হাওয়া দিচ্ছে দোলা। ফাল্গুন মাস শুরুর আগে থেকেই গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে মৌ মৌ ঘ্রাণ। আগুন ঝরা ফাগুনে গাছে গাছে জেগে উঠছে সবুজ পাতা। সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ।

মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে। প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে রামগঞ্জ শহর থেকে শুরু করে গ্রামের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলেরভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। বসন্তের নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে গাছে গাছে আমের মুকুল। আর এ মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মনকে করে তুলছে আরো প্রাণবন্ত। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলেও গত বছরের চেয়ে এবার আমের ফলন বেশি হবার সম্ভাবনা রয়েছে লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে। এ উপজেলার রাস্তার দু’পাশে আম বাগানে এবং প্রায় বাড়ির আঙিনার গাছে গাছে আমের মুকুলের সমারোহ লক্ষ করা গেছে। এ অঞ্চলের এমন কোনো আমের গাছ নেই যে, মুকুল আসেনি! প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় আমের গাছ বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে। রামগঞ্জ পৌরসভা ও উপজেলার ভাদুর ও আলীপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন শুক্রবার ও শনিবারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আম গাছে সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন।

মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। এ মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত রামগঞ্জে প্রকৃতি। সবুজ আম গাছ ঢেকে গেছে হলদে মুকুলে। মধুমাস ঋতুরাজ বসন্ত আসার আগাম বার্তা নিয়ে আসছে গাছে গাছে আমের মুকুল। এছাড়াও বসন্তকাল আসার আগমনে প্রায় প্রতিটি গাছে গাছে ফুল প্রকৃতিতে চারদিক যেন মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে ওঠে। উপজেলার প্রতিটি বাড়ি ও আম বাগানে আমের মুকুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারপাশ। দিন দিন বাড়ছে হরেক রকমের সুস্বাদু আমের চাষ। বাগান বা বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুুর পাড়ে ও রাস্তার পাশে আম গাছে মুকুলে মৌ মৌ গন্ধ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন আম চাষিরা।

এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা। রামগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানিয়েছেন, রামগঞ্জের গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ, মৌ মৌ করছে প্রকৃতি-রামগঞ্জে গাছে গাছে আমের মুকুল॥

আপডেট সময় ১২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ…।’ পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে।

গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। ক্যালেন্ডারের পাতায় বাজছে শীতের বিদায়ী ঘণ্টা। কিছুদিনের মধ্যে বেলা ফুরাবে অতিথি পাখিদের, ফিরবে নিজ মাতৃভূমিতে। গাছে গাছে ফুলের মুকুল বার্তা দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের। কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতালে ফাগুনের উত্তাল বাসন্তী হাওয়া দিচ্ছে দোলা। ফাল্গুন মাস শুরুর আগে থেকেই গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে মৌ মৌ ঘ্রাণ। আগুন ঝরা ফাগুনে গাছে গাছে জেগে উঠছে সবুজ পাতা। সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ।

মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে। প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে রামগঞ্জ শহর থেকে শুরু করে গ্রামের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলেরভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। বসন্তের নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে গাছে গাছে আমের মুকুল। আর এ মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মনকে করে তুলছে আরো প্রাণবন্ত। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলেও গত বছরের চেয়ে এবার আমের ফলন বেশি হবার সম্ভাবনা রয়েছে লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে। এ উপজেলার রাস্তার দু’পাশে আম বাগানে এবং প্রায় বাড়ির আঙিনার গাছে গাছে আমের মুকুলের সমারোহ লক্ষ করা গেছে। এ অঞ্চলের এমন কোনো আমের গাছ নেই যে, মুকুল আসেনি! প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় আমের গাছ বেশ আগেভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে। রামগঞ্জ পৌরসভা ও উপজেলার ভাদুর ও আলীপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন শুক্রবার ও শনিবারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আম গাছে সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন।

মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। এ মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত রামগঞ্জে প্রকৃতি। সবুজ আম গাছ ঢেকে গেছে হলদে মুকুলে। মধুমাস ঋতুরাজ বসন্ত আসার আগাম বার্তা নিয়ে আসছে গাছে গাছে আমের মুকুল। এছাড়াও বসন্তকাল আসার আগমনে প্রায় প্রতিটি গাছে গাছে ফুল প্রকৃতিতে চারদিক যেন মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে ওঠে। উপজেলার প্রতিটি বাড়ি ও আম বাগানে আমের মুকুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারপাশ। দিন দিন বাড়ছে হরেক রকমের সুস্বাদু আমের চাষ। বাগান বা বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুুর পাড়ে ও রাস্তার পাশে আম গাছে মুকুলে মৌ মৌ গন্ধ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন আম চাষিরা।

এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা। রামগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার জানিয়েছেন, রামগঞ্জের গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষীরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।