কুলাউড়ায় লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের শিক্ষিকাকে মারধরের ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত হয়েছে লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজ।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) লংলা কলেজ প্রাঙ্গণে হামলাকারী রাশেদ আহমদের হামলা ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এসময় কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে কলেজ শিক্ষিকা নাজমা বানুর উপর করা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করে অবিলম্বে রাশেদের বিচার দাবি করে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থীরা । মানববন্ধনে কলেজের মানবিক বিভাগের উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নিশাত আক্তার বলেন, অভিযুক্ত রাশেদের বিচার দ্রæত নিষ্পত্তি করতে হবে। এবং আইন অনুযায়ী তার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। যাতে কলেজ শিক্ষক-শিক্ষিকার নিরাপত্তা আরও জোরদার হয় । আরেক শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার বলেন, অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলন আরও জোরালো হবে ।
এসময় বক্তারা বলেন মিথ্যা মামলা দ্রæত প্রত্যাহার না করলে সব স্কুল কলেজ মিলে আন্দোলন করা হবে । আরও কঠিন আন্দোলন করে মিথ্যা মামলার জবাব দেওয়া হবে।
তবে মানববন্ধনে কলেজের কোনো শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন নি। এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আতাউর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হোসেন জানান, আমারা শিক্ষকরা মানববন্ধনের বিষয়ে কিছু জানি না । শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে মামলার প্রতিবাদ করেছে ।
নির্যাতিত কলেজ শিক্ষিকা নাজমা বানু জানান, আমাকে মারধর করে এখন আবার উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে রাশেদ। আগে সে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। উল্লেখ্য গত সেপ্টেম্বর মাসে লংলা কলেজ শিক্ষিকা নাজমা বানুর উপর করা হামলা করে রাশেদ আহমদ চৌধুরী (৪০) নামে এক যুবক। এ ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) লংলা কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
জানা যায়, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা নাজমা বানু কলেজের পাশে মুদিপুর এলাকায় রাশেদের ভাই শামীম মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকতেন। শামীম দেশে না থাকায় ওই বাসা রাশেদ দেখাশোনা করতেন।
রাশেদ বাসার পানি সরবরাহ করতে বিভিন্ন সমস্যা করছিলেন। বিষয়টি রাশেদকে বারবার বলার পরও পানির সমস্যা সমাধান করে না দেয়ায় রাশেদের মামা আমুদ মিয়াকে বিষয়টি অবহিত করেন নাজমার স্বামী কুলাউড়া উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল মতলিব। এতে রাশেদ ক্ষিপ্ত হয়ে নাজমা বানুসহ তার স্বামীকে কিল-ঘুষি মেরে চাকু দিয়ে হত্যাচেষ্টা করে।
এ ঘটনায় রাতেই নাজমা বানু থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ ফোর্স অভিযান চালিয়ে রাশেদকে গ্রেপ্তার করে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুছ ছালেক বলেন, শিক্ষিকা নাজমা বানুকে মারধরের পর থেকে রাশেদ আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তাকে রাউৎগাঁওয়ের পালগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। হামলাকারী রাশেদ জামিনে বেরিয়ে এসে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন কলেজ শিক্ষিকা নাজমা বানু।