লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার রাজাকার মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে স্থানীয় রাজাকাররা পরাজয় বরণ করে এক এক করে আত্মসর্ম্পন করলে রামগঞ্জ থানা মুক্ত হয়। জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ ব্যাপী হানাদার মুক্ত ঘোষণা হলেও রামগঞ্জ থানা ছিল পাকিস্তানী হানাদারদের দোসর রাজাকারদের দখলে।
৪ ডিসেম্বর রামগঞ্জ থানায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী তাদের দোসর রাজাকারদের রেখে থানা ত্যাগ করে, তৎকালীন লক্ষ্মীপুর মহকুমা শহর হয়ে নোয়াখালী জেলা মাইজদী শহর অভিমুখে চলে যায়। তারপর থেকে থানা এলাকা দখলে নিয়ে পুরো রামগঞ্জ শহরকে জিম্মি করে রাখে রাজাকাররা। ১৫ দিন ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে রাজাকারদের দফায় দফায় যুদ্ধ চলে।
অবশেষে ১৯ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে স্থানীয় রাজাকাররা পরাজয় বরণ করে এক এক করে আত্মসর্ম্পন করলে রামগঞ্জ থানা মুক্ত হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ আহম্মদ পাটোয়ারী জানান, ১৯৭১সালের তৎকালীন সুবেদার তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে রামগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধারা ছিল তৎপর। এ মুক্তিযুদ্ধে রামগঞ্জ থানা ৩৬জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামি অগনিত নিরীহ জনগন শহীদ হন।
এসময় তিনি আরো বলেন, ৪ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫দিন ব্যাপী রাজাকারদের সাথে তুমুল যুদ্ধ করে রামগঞ্জকে মুক্ত করেছেন তারা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে জেলার রামগতি, রায়পুর, রামগঞ্জ কমলনগর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক খণ্ডযুদ্ধ হয়। এর মধ্যে রামগঞ্জ-মীরগঞ্জ সড়কে ১৭ বার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পরে পরাজিত রাজাকারদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে বীরমুক্তিযোদ্ধারা রামগঞ্জ থানার লামচরের কৈল্লার চর খামার এলাকায় কাতাল্ল্যা দিঘীর পাশে এনে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়।