গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্বোচিত হামলা চালিয়ে এই সরকার যে সভ্য সমাজে বসবাসের জন্য অকার্যকর সেটা প্রমাণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল অব. অলি আহমদ।
তিনি বলেন, আমি মনে করি, এ হামলায় বিএনপির হয়তো ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের কাছে এই সরকারকে তার উলঙ্গ রূপ প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করতে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এলডিপির প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান। অলি আহমদসহ প্রতিনিধি দলকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখান।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে এই সরকার যে সভ্য সমাজে বসবাসের জন্য অকার্যকর সেটা প্রমাণ করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির সাবেক এই নেতা।
অলি বলেন, বর্তমান সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, বানোয়াট মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে কারাগারে আবদ্ধ রেখেছে। জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে কেউ কখনো ক্ষমতায় টিকতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না। তাদের পতন সময়ের ব্যাপার।
এসময় কারাগারে থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ দলটির কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি দাবি জনান অলি।
দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, এই সরকারের ধ্বংস অনিবার্য। কাজেই তারা যত চেষ্টাই করুক না কেন, আমরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দেব না।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, কেউ একা চলতে পারে না। আমরাও চাই সবাই মিলে মিশে থাকতে। আপনাদের অনুরোধ করছি- এই দেশের মানুষের ওপর যারা অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে, দুর্নীতি করে দেশে টাকা বিদেশে পাচার করছেন, তাদের আশ্রয় দেবেন না। তারা যাতে পালাতে না পারে, ভিসা দেবেন না।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি হামলা ও তল্লাশি মতো বর্বরতা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীও কোনো দলের কার্যালয়ে কিংবা কারও বাসাবাড়িতে চালায়নি বলেও মন্তব্য করেন অলি আহমদ।
তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপি ১০ দফা দিয়েছে, সবাই মিলে ১০ দফা হয়েছে এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঐক্যেবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। তবে বেইমান সব সময় আছে, থাকবে। আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যে গতি সঞ্চার করেছি এটাকে আরও বেগমান করে অভিষ্ঠ লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতাদের উদ্দেশ্য করে ২০ দলীয় জোটের শরীক এই নেতা বলেন, অনেক দল আছে যারা স্বামী-স্ত্রী নির্ভর, সীমাবদ্ধ। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সংখ্যা বাড়ানো চেয়ে, যাদের সংগঠন আছে, জনমত আছে তাদের নিয়ে ঐক্য গড়ে তুলুন। আমাদের ডাকলে আমরা আসবো, না ডাকলেও আপনাদের বিপদে পাশে থাকব।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশের মানুষ এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করে গণতন্ত্রকে কবরে নিয়ে গেছে বর্তমান সরকার। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা তাদের অস্থিরতা ও দুর্বলতা প্রকাশ পায়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশ ও দেশের রাজনীতি খেলার বস্তু নয়; নোংরা খেলা দূরীকরণে ঐক্যেবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নাই।