গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনতে আগ্রহী না হওয়ায় সপ্তাহজুড়েই দাম কমেছে। এতে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আগের সপ্তাহেও কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমার শীর্ষ স্থান দখল করে।
গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১৩৪ টাকা ৯০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ৫২৭ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৬৬২ টাকা ৪০ পয়সা।
অবশ্য এই দরপতনের আগে প্রায় তিন মাস ধরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। এতে ৮৭ টাকা থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়ে ৯৭৩ টাকা পর্যন্ত ওঠে। গত ৩০ জুন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৮৭ টাকা ৩০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে ২৭ অক্টোবর প্রতিটি শেয়ারের দাম ৯৭৩ টাকা ৯০ পয়সায় ওঠে। এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পরই কোম্পানিটির শেয়ার পতনের মধ্যে পড়েছে।
শেয়ার দামে এমন উত্থান-পতন হওয়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগে ২০২১ সালে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এছাড়া ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে ১০ শতাংশ, ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে ১৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০২২ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি ৬৩ পয়সা মুনাফা করেছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৭২ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা কমেছে ৯ পয়সা।
এদিকে দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৮৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
২০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৬০টি। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৫৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আর ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ আছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে।।
ওরিয়ন ইনফিউশনের পরেই গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় ছিল পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ দাম কামার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা পেপার মিলস।
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিসের ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, সামিট এলায়েন্স পোর্টের ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ, বাংলাদেশ ওয়াল্ডিংয়ের ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ, হা-ওয়েল টেক্সটাইলের ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৯৫ শতংশ এবং প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ দাম কমেছে।