ঢাকা ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল পটুয়াখালীতে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়া স্মৃতি পদক পেলেন জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজশাহী জেলার সদস্য সচিব গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন জরুরি : যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না তাঁতীলীগের সভাপতি ইকবালের যত কান্ড, জনমনে প্রশ্ন কে এই ইকবাল? সিএমপির পাহাড়তলী থানার মাদক বিরোধী অভিযানে ভুয়া সাংবাদিক ফারুক মাদকসহ গ্রেফতার অন্তর্বতী সরকারের ১শ দিন পার হলেও সচিবালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরের এখনও আওয়ামী লীগের দোসরা বহাল পূর্বাচলে দুর্নীতির রাজত্ব গড়েছেন নায়েব আলী শরীফ ডঃ মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ নবীনবরণ উৎসব ২০২৪ পালিত। মুগদায় ১০ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

২৫ দিনে এলো ১৩৫ কোটি ডলার

নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও  প্রবাসী আয়ে গতি ফেরেনি। চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৬০ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ চিত্র পাওয়া গেছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। অর্থনীতির অন্যতম এ সূচকটির নেতিবাচক গতি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে সরকারকে। এমন পরিস্থিতিতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে বিভিন্ন শর্ত শিথিল, চার্জ ফি মওকুফসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও ইতিবাচক সাড়া মিলছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, নভেম্বরের ২৫ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০৭ কোটি ৯৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর রেমিট্যান্স প্রবাহ ওঠানামা করলেও গত অক্টোবরের মতো রেমিট্যান্স প্রবাহ এতোটা কমেনি। গত অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা ছিল টানা ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২১ সালের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

চলতি মাসের ২৫ দিনে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে ৩২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার এসেছে। এরপর অগ্রণী ব্যাংকে এসেছে ৯ কোটি ৬ লাখ, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকে ৮ কোটি ৫৫ লাখ, সোনালী ব্যাংক ৮ কোটি ১৪ লাখ এবং আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের এসেছে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার প্রবাসী আয়।

আলোচিত সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক ও  ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।

অর্থ পাচার ও কালো টাকা না কমলে বৈধ পথে রেমিট্যান্সও বাড়বে না, বিভিন্ন মহলের এমন বার্তার পর হুন্ডি প্রতিরোধের নতুন কৌশলে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠন করা হয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সম্প্রতি হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাবে সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত করে বিএফআইইউ। বলা হয়, ভবিষ্যতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে এমন প্রতিশ্রুতি দিলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে।

রেমিট্যান্স বাড়া‌তে যত উদ্যোগ

বৈধ উপায়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও রেমিট্যান্স বাড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ১৫২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি না থাকা বড় ভুল

২৫ দিনে এলো ১৩৫ কোটি ডলার

আপডেট সময় ১১:৫৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও  প্রবাসী আয়ে গতি ফেরেনি। চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৬০ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ চিত্র পাওয়া গেছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। অর্থনীতির অন্যতম এ সূচকটির নেতিবাচক গতি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে সরকারকে। এমন পরিস্থিতিতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে বিভিন্ন শর্ত শিথিল, চার্জ ফি মওকুফসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও ইতিবাচক সাড়া মিলছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, নভেম্বরের ২৫ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১০৭ কোটি ৯৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর রেমিট্যান্স প্রবাহ ওঠানামা করলেও গত অক্টোবরের মতো রেমিট্যান্স প্রবাহ এতোটা কমেনি। গত অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা ছিল টানা ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২১ সালের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

চলতি মাসের ২৫ দিনে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে ৩২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার এসেছে। এরপর অগ্রণী ব্যাংকে এসেছে ৯ কোটি ৬ লাখ, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকে ৮ কোটি ৫৫ লাখ, সোনালী ব্যাংক ৮ কোটি ১৪ লাখ এবং আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের এসেছে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার প্রবাসী আয়।

আলোচিত সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক ও  ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।

অর্থ পাচার ও কালো টাকা না কমলে বৈধ পথে রেমিট্যান্সও বাড়বে না, বিভিন্ন মহলের এমন বার্তার পর হুন্ডি প্রতিরোধের নতুন কৌশলে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠন করা হয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সম্প্রতি হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাবে সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত করে বিএফআইইউ। বলা হয়, ভবিষ্যতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে এমন প্রতিশ্রুতি দিলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে।

রেমিট্যান্স বাড়া‌তে যত উদ্যোগ

বৈধ উপায়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও রেমিট্যান্স বাড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ১৫২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম।