ঢাকা ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বড় কান্দিতে বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা, দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান চিত্র নায়ক থেকে রাজপথের নায়ক হেলাল খানের দক্ষ নেতৃত্বে আবারো প্রাণ ফিরে পাচ্ছে জাসাস গাংনীর চিৎলা পাটবীজ খামার যেন জেডি মোর্শেদুলের পৈত্রিক সম্পত্তি! নওগাঁর সাবেক এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার এর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা জুলাই অভ্যূত্থানে শহীদদের স্মরণে ববি ছাত্রদলের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় জামায়াতের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত ক্যাম্পাসের পুকুরে ভেসে উঠলো জুলাই যোদ্ধার লাশ রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নাই : এ্যানী চৌধুরী শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভায় মোবাইল কোর্ট  পরিচালনা করেছেন  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উন্নত স্বাস্থ্য সেবার অঙ্গীকার নিয়ে নিউ লাইফ মেডিকেল সার্ভিসের যাত্রা শুরু করলো

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী লি জে-মিয়ং

পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন লি জে-মিয়ং। দীর্ঘ রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার পর গতকালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন দেশটির বিরোধী এই নেতা।
পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তা সামাল দেওয়াই এখন লি জে-মিয়ংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বুধবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক সংকট ও বিশৃঙ্খলার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন বিরোধী নেতা লি জে-মিয়ং।
মূলত এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সামরিক শাসন জারির চেষ্টায়। তার এই স্বল্পস্থায়ী ও চরম বিতর্কিত সেই পদক্ষেপ দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্ট তাকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।

মূলত এই ঘটনাগুলোর পর দেশজুড়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়, তা সামাল দেওয়াই এখন লি জে-মিয়ংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি এমন একটি সময় দায়িত্ব নিচ্ছেন, যখন দেশ অভ্যন্তরীণভাবে তীব্রভাবে বিভক্ত এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাকে কঠিন কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতে হবে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি পুনরায় আলোচনা করে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর শুল্কের চাপ কমাতে হবে।
বিবিসি বলছে, নির্বাচনে মিয়ংয়ের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী কিম মুন-সু। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জরিপে পিছিয়ে থাকা কিম নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল দেখে বুধবার ভোরে পরাজয় স্বীকার করেন এবং লিকে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানান।

লি নিজের বক্তব্যে সরাসরি জয় ঘোষণা না করলেও ইঙ্গিত দেন যে তিনি জিতেছেন। তিনি বলেন, তার প্রথম কাজ হবে “দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার”। ৬১ বছর বয়সী এই রাজনীতিক মাত্র তিন বছর আগে খুব অল্প ভোটে ইউনের কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। ফলে এটি তার জন্য এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন।
তবে লি নিজেও একাধিক রাজনৈতিক বিতর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কেলেঙ্কারিও তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনে অনেক ভোটার লি জে-মিয়ংয়ের প্রতি বিশেষ সমর্থন দেখাতে নয়, বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতেই ভোট দিয়েছেন।

রাজনৈতিক পরামর্শক সংস্থা মিন কনসালটিংয়ের প্রেসিডেন্ট পার্ক সাং-মিন বিবিসিকে বলেন, “এই নির্বাচন ছিল এক ধরনের গণ-অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ। মানুষ এখানে গণতন্ত্রের পক্ষে এবং সেনাশাসনের চেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই জয় দেখিয়েছে যে দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রকে সব কিছুর ওপরে স্থান দেয়।”

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বড় কান্দিতে বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা, দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী লি জে-মিয়ং

আপডেট সময় ১১:৪৫:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন লি জে-মিয়ং। দীর্ঘ রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার পর গতকালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন দেশটির বিরোধী এই নেতা।
পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তা সামাল দেওয়াই এখন লি জে-মিয়ংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বুধবার (৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক সংকট ও বিশৃঙ্খলার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন বিরোধী নেতা লি জে-মিয়ং।
মূলত এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সামরিক শাসন জারির চেষ্টায়। তার এই স্বল্পস্থায়ী ও চরম বিতর্কিত সেই পদক্ষেপ দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং শেষ পর্যন্ত পার্লামেন্ট তাকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।

মূলত এই ঘটনাগুলোর পর দেশজুড়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়, তা সামাল দেওয়াই এখন লি জে-মিয়ংয়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি এমন একটি সময় দায়িত্ব নিচ্ছেন, যখন দেশ অভ্যন্তরীণভাবে তীব্রভাবে বিভক্ত এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তাকে কঠিন কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতে হবে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি পুনরায় আলোচনা করে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর শুল্কের চাপ কমাতে হবে।
বিবিসি বলছে, নির্বাচনে মিয়ংয়ের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী কিম মুন-সু। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন জরিপে পিছিয়ে থাকা কিম নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল দেখে বুধবার ভোরে পরাজয় স্বীকার করেন এবং লিকে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানান।

লি নিজের বক্তব্যে সরাসরি জয় ঘোষণা না করলেও ইঙ্গিত দেন যে তিনি জিতেছেন। তিনি বলেন, তার প্রথম কাজ হবে “দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার”। ৬১ বছর বয়সী এই রাজনীতিক মাত্র তিন বছর আগে খুব অল্প ভোটে ইউনের কাছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। ফলে এটি তার জন্য এক অসাধারণ প্রত্যাবর্তন।
তবে লি নিজেও একাধিক রাজনৈতিক বিতর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কেলেঙ্কারিও তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনে অনেক ভোটার লি জে-মিয়ংয়ের প্রতি বিশেষ সমর্থন দেখাতে নয়, বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতেই ভোট দিয়েছেন।

রাজনৈতিক পরামর্শক সংস্থা মিন কনসালটিংয়ের প্রেসিডেন্ট পার্ক সাং-মিন বিবিসিকে বলেন, “এই নির্বাচন ছিল এক ধরনের গণ-অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ। মানুষ এখানে গণতন্ত্রের পক্ষে এবং সেনাশাসনের চেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই জয় দেখিয়েছে যে দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রকে সব কিছুর ওপরে স্থান দেয়।”