নগরের চট্টগ্রাম থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রসহ পুলিশের বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামির দেওয়া তথ্যে এসব সরঞ্জাম জব্দ করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ওইদিন বিকেল থেকে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় লুটপাট, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সোমবার ভোরে থানা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে হওয়া মামলায় মো. মাহাবুর রহমান নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিটেক কলেজ রোড এলাকার ওই পুকুরে অস্ত্র লুকিয়ে রাখার তথ্য দেন। এরপরই ওই অস্ত্র উদ্ধারে প্রায় দুই ঘণ্টা পুকুরে অভিযান চালানো হয়। তার দেওয়া তথ্যে আকবর শাহ থানাধীন রেলওয়ে হাউজিং এলাকা থেকে নূর নবী নামে আরও একজনকে আটক কর হয়।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যে আকবর শাহ থানাধীন ইস্পাহানী পাহাড় থেকে একটি ৯ এমএম পিস্তল উদ্ধার করা হয়, যা ৫ আগস্ট পাহাড়তলী থানা থেকে লুণ্ঠিত হয়েছিল।
এ ছাড়া পাহাড়তলী থানা থেকে লুট হওয়া আটটি পিস্তল, দুটি চাইনিজ রাইফেল, তিনটি এসএমজি, ছয়টি শটগান ও ৩৫টি মোটরসাইকেলের এখনো কোনো হদিস মেলেনি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, পাহাড়তলী থানায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুকুরে জাল ফেলে তল্লাশি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পুকুরে তল্লাশি করে অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তবে দুটি মোটরসাইকেল পাওয়া গেছে। ভাঙচুরের পর সেগুলো পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। পরে ইস্পাহানি রেলগেট পাহাড় থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্র লুটের মামলায় দুই জনকে আটক করা হয়েছে।
সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভুইয়া জানান, সোমবার ভোরে পাহাড়তলী থানাধীন সাগরিকা মোড় থেকে আসামি মাহাবুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৫ আগস্ট পাহাড়তলী থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটে জড়িত থাকার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর সহযোগী নুরের নাম প্রকাশ করেন।
মাহাবুরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাহাড়তলী থানাধীন কর্নেল জোন্স রোডে তাঁর ভাড়া বাসা থেকে পুলিশের একসেট ইউনিফর্ম, দুটি হাতঘড়ি, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একজোড়া কেডস ও সিভিল জুতা, পুলিশের লোগোযুক্ত একটি ছাতা, একটি ট্রাউজার, একটি ইলেকট্রিক কেটলি, একটি ট্রিমার, দুটি চশমা ও একটি রেইনকোট উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরও বলেন পাহাড়তলী থানা থেকে লুট করা অস্ত্র ও কয়েকটি মোটরসাইকেল পাহাড়তলী থানাধীন বিটাক বাজার কলেজ রোডসংলগ্ন পুকুরে এবং কয়েকটি সরকারি ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাফ অন্যত্র ফেলে দেন তিনি। বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে দুটি পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান পরে আকবরশাহ থানাধীন রেলওয়ে হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান চালিয়ে আসামি নুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আকবরশাহ থানাধীন ফারুক চৌধুরীর মাঠের পশ্চিম পাশের ইস্পাহানি পাহাড়ের জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।