বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় অধীনে ঢাকা সড়ক পরিবহন ভবনের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক(অর্থ) সরদার মাহবুবুর রহমানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজের স্ত্রীকে ঠিকাদার বানিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বানিয়েছেন । তিনি আবার নামে বেনামে বিভিন্ন স্থানে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন । আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী শেখ সেলিমের হাত ধরে ছাত্রলীগ থেকে তার এই রাজনীতিতে আসা । পর্যায়ক্রমে শেখ সেলিমের আস্থাভাজনের হয়ে ওঠেন মাহবুবুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকারের শুরু থেকে শেখ সেলিমের মাধ্যমে বিআরটিএ অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে চাকুরি নেন সরদার মাহবুবুর রহমান। চাকুরির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বহাল তরিয়তে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অফিস সহকারি পেয়ে রাতারাতি পদোন্নতি নিয়ে হয়ে যান উপ-পরিচালক ( অর্থ) বিভাগের। এই নিয়ে প্রধান কার্যালয়ের সাধারণ কর্মকর্তাও কর্মচারীরা কানা ঘোষণা করেন একজন অফিস সহকারী চাকুরি নিয়ে রাতারাতি কিভাবে উপ-পরিচালক হলেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আওয়ামীলীগ আমলে অবৈধভাবে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিভিন্ন ভাবে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তার এই অপকর্মে সংশ্লিষ্ট অফিসের সকলের মনে নাড়া দিয়ে ওঠে অল্প দিনে কিভাবে এত সম্পত্তির মালিক হলেন । আওয়ামী লীগ সরকার পতন হওয়ার পরও কিভাবে বহাল তৈরিতে এখনো চাকরি করছেন সরদার মাহবুব রহমান। সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, শেখ সেলিম ও ওবায়দুল কাদেরের দোসররা সংশ্লিষ্ট অফিসে চাকুরি করে যাচ্ছেন ।
ওইসব দোসরদের জন্য এই প্রতিষ্ঠানে দুর্নাম ছড়িয়ে পড়ছে। ওইসব দোসরদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত না করলে তারা একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাবে। এদিকে সড়ক জনপথ ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক জনপদ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবরের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি উপ-পরিচালক সরদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। অভিযোগে উল্লেখ আছে, মাহবুবুর রহমান আওয়ামী লীগের সরকারের শুরু থেকে চাকুরি পাওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি ও সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন। তিনি বিআরটিএ র প্রধান কার্যালয়ে চাকুরির শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত চাকুরি করার সুবাদে কারণে সারা বাংলাদেশে বিআরটিএ তকদীর বাণিজ্য, ঘুষ দুর্নীতি এমনকি অফিসের সরকারি অর্থ কিভাবে আত্মসাৎ করা যায় সেই ফাঁদ তিনি পাতিয়ে অবৈধভাবে সরকারি কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে আরো উল্লেখ আছে, সরদার মাহবুবুর রহমান তিনি নিজেকে গোপালগঞ্জ বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দেন সবার কাছে। কিন্তু তার বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলা সোগানিয়া গ্রামের আব্দুর রাশেদ সরদারে ছেলে সরদার মাহবুবুর রহমান ।
তিনি এতিমখানা থেকে লালিতপালিত হয়ে বড় হয়েছেন। যেখানে দুর্নীতি অনিয়ম করে অর্থ আত্মসাৎসহ কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে প্রকাশ্য অনুসন্ধান শুরু করবে(দুদক)। উপদেষ্টার দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, একজন অভিযোগ কারীর লিখিত একটি অভিযোগ ২২ অক্টোবর উপদেষ্টা বরাবর পাঠিয়েছেন। সরদার মাহবুবুর রহমান অনিয়ম দুর্নীতি ও সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ । তার স্ত্রীকে ঠিকাদার বানিয়ে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ এবং নামে বেনামে তার স্থাবর এর অনুসন্ধান করবে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও দুদক। সরদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ থেকে জানা যায়, তিনি চাকুরীরিতে থাকা অবস্থায় ক্ষমতার বিশেষ প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে নামে বেনামে কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। এছাড়াও তিনি তার স্ত্রীর নামে ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে ফ্ল্যাট ও জায়গা জমি ক্রয় করেছেন। সরদার মাহবুবুর রহমান উপ-পরিচালক (অর্থ )বিভাগের দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার বিজ্ঞাপন বিল ও টেন্ডারের বিল অর্থ বিভাগ থেকে দিয়ে থাকেন। যে সকল ব্যক্তিরা টেন্ডারে কাজ করার সুযোগ পায় তাদের সাথে অতি গোপনে অর্থ বাণিজ্য এবং লেনদেন করে থাকেন।
সরদার মাহবুবুর রহমান বিরুদ্ধে অভিযোগকারী আফতাব উদ্দিন লিখিত অভিযোগ উল্লেখ করেন ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে সরদার মাহবুবুর রহমানের ও তার স্ত্রীর নামে কয়েকটি বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনার অভিযোগ রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বাসা- ১৯/সি/২ উত্তর টোলারবাগ, থানা দারুসসালাম মিরপুরে একটি বাড়ি মালিক মাহাবুর রহমান স্ত্রীর নামে। ধানমন্ডির জিগাতলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ।
নিজ এলাকার নড়াইলে তার স্ত্রীর নামে ৫ম তলা একটি বাড়ি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। তাছাড়াও অভিযোগে আরো বলা হয়েছে মাহবুবুর রহমান তার স্ত্রীর নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকা জমা করেছে। এছাড়াও মাহবুবুর রহমান ও তার পরিবারের দুইটি প্রাইভেটকার তিনটি মাইক্রোবাস ও চারটি বাস রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অফিসের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মাহবুবুর রহমানকে বিগত সরকারের আমলে তেলবাজ হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। তিনি বলেন আমাকে কেউ কোন প্রকার ক্ষতি করতে পারবে না । বিআরটিএ সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ আমার পক্ষে রয়েছে। এই সুবাদে বিআরটিএ’ র বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি ও সরকারের কোষাগার থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে যাচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উপ-পরিচালক সরদার মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে সবকিছুই অভিযোগই মিথ্যা। সরকার যদি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ পায় তাহলে আমি চাকুরি ছেড়ে চলে যাব । যারা অভিযোগ করেছে হয়তো আমার মান সম্মান নষ্ট করার জন্য এই অভিযোগটি করেছে ।
তার এই অপকর্মের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সবকিছু বেরিয়ে আসবে বলে অভিযোগকারীর ধারণা । তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপদেষ্টার ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে আমার আকুল আবেদন সরদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনিতো অভিযোগগুলো তদন্ত করবেন ।