রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের নবনিযুক্ত সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার সোম ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নবনিযুক্ত অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট খোন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চুকে অপসারণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১ টায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজবাড়ী জেলা শাখার যৌথ আয়োজনে জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এন এম শাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক (২), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজবাড়ী জেলা শাখার সমন্বয়ক এইচ এম হাসিব, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রাজবাড়ী জেলা শাখার সদস্য অ্যাডভোকেট এম এম শাহরিয়ার জামান রাজিব, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আইয়ুব খান, অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. চঞ্চল শিকদার ও অ্যাডভোকেট মো. তুহিন শেখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের নবনিযুক্ত সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) স্বপন কুমার সোম ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসর ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট। তিনি ২০২১ সালে জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া নবনিযুক্ত অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) খোন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চু জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি। তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে রাজবাড়ী-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচনের নামে আওয়ামী লীগকে সহযোগীতা করেছেন। তাদের মতো ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসরদেরকে জিপি-এপিপি নিয়োগ করে ২৪ এর আন্দোলনে নিহত শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানী করা হয়েছে।
বক্তারা আজকের দিনের মধ্যে স্বপন কুমার সোম ও খোন্দকার হাবিবুর রহমান বাচ্চুকে অপসারণের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধন শেষে আদালত চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন আইনজীবীরা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের পর জিপি ও এপিপির অফিস কক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা দেন জাতীয়াবাদী আইনজীবী ফোরামের আইনজীবীরা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন, বিচার ও সংসদ বিভাগের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু বলেন, আমি আইনজীবীদের এই আন্দোলনে থাকতে পারিনি। তবে তাদে এ যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমি একমত। নবনিযুক্তদের অপসারণ করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের জিপি ও এপিপি হিসেবে নিয়োগের দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ (জিপি-পিপি) শাখা থেকে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও এর অধীন আদালতে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পূর্বে নিয়োগকৃত সকল আইন কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল করে নতুন করে একজন সরকারি কৌঁসুলি, দুইজন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি, ১০ জন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি, দুইজন পাবলিক প্রসিকিউটর, ছয়জন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও চারজন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয়া হয়।