ম নগরীর সিএমপির আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানা এলাকায় বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য দিনে
দুপুরে হচ্ছে চুরি ছিনতাই ডাকাতি সহ নানা অপকর্ম।
অলিতে গলিতে বেড়েছে উঠতি বয়সী কিশোরদের আনাগোনা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত এই সকল কিশোরদের
রয়েছে আলাদা আলাদা গ্রুপ ও সংগঠন। এসব গ্রুপ ও সংগঠনের মাধ্যমে তারা এলাকায় করছে নৈরাজ্য সৃষ্টি।
এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ওদেরকে ব্যবহার করে এলাকার দাঙ্গা হাঙ্গা সহ করছে নানা অপকর্ম। এরা এলাকায় বড় ভাই ও রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে
চাঁদাবাজি দখলবাজি সহ নানা প্রকার অপকর্মে লিপ্ত। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের আগে এই সকল কিশোর গ্যাংয়ের
সদস্যদের দেখা গিয়েছে আওমীলীগ এর বিভিন্ন সভা সেমিনারে। এরাই এখন আবার বিভিন্ন দলের হয়ে নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। শিশু-কিশোরদের অপরাধে লিপ্ত করা খুবই সহজ বিষয় তাই যেকোনো রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে এই সকল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এদেরকেই ব্যবহার করে নেতারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে থাকেন। কারণ এদেরকে অপরাধে ব্যবহার করাটা অনেকটা সহজ যেহেতু এসব শিশু-কিশোররা একটু আবেগী হয়ে থাকে তাই আবেগের তাড়নায় এরা অনেক কিছুই করতে পারে যদি লিডার অনুমতি দেয় কাউকে মেরে ফেলতে হবে তাও এদের জন্য কঠিন কিছু নয়। আগে এসব শিশু -কিশোরদের ব্যবহার করতেন আওয়ামী লীগের নেতারা তারা আত্মগোপনে থাকায় এখন এদের কে ব্যবহার করছে বিভিন্ন দলের নেতারা।
চট্টগ্রাম নগরীর ৪ সংসদীয় আসনের সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৯ নং ও ১০ নং ওয়ার্ড মিলে আকবর শাহ ও পাহাড়তলী গঠিত। এ দুটি থানা এলাকা আগে আওয়ামী
লীগের একাধিক নেতা পরিচালনা করতো তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ,যুবলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগ শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ সহ এক ডজন এর উপরে নেতা নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে। এদের অধীনে ছিল প্রায় ৭/৮ হাজারের অধিক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এদের হাত ধরেই ৯-১০ ওয়ার্ডে আধিপত্য বিস্তার করেছে এসকল গ্যাংয়ের সদস্যরা। এক কথায় বলা চলে এরাই ছিল এদের মূল মাস্টারমাইন্ড।
এই সকল নেতাদের হাত ধরেই বিগত ১৫-১৬ বছরে এসব
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের জন্ম হয়েছে। ৯ আর ১০ ওয়ার্ড মিলে অপরাধ পরিক্রমা বিবেচনা করলে এরাই বর্তমানে এ ওয়ার্ড গুলো ধরক ও বাহক এদের নিয়ন্ত্রণে চলতো পুরো এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা।
বিগত সময় ওই সকল নেতাদের নিয়ন্ত্রণাধীন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাই বিভিন্ন দলের হয়ে কাজ করছে। কথায় আছে কিশোর গ্যাংয়ের কোন দল হয় না এরা চলমান নদীর প্রবাহের মত সাগরের উতাল ঢেউ এর মত প্রবাহমান। এরা যেখানে সেখানে যখন তখন তরী ভিড়াবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ এদের দরকার সুরক্ষা বলয় এই সুরক্ষা বলায় যে দিতে পারবে তারা তার হয়ে কাজ করবে এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে বিনিময়ে পাবে মাদক সেবন করার জন্য সামান্য অর্থ। এই অর্থের জন্য তারা যে কাউকে খুন করতে দ্বিধাবোধ করবে না। এদেরকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অর্থ বিত্তের পাহাড় গড়ে তুলছে। আর এই সকল শিশু -কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে কিশোর অপরাধে। এখান থেকে বের হয়ে আসার তেমন কোনো সুযোগ নেই। কিছু শিশু-কিশোরদের মাঝে মধ্যে সংশোধনাগারে পাঠিয়ে সংশোধন করা গেলেও বেশিরভাগে থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে।
কিশোর গ্যাংয়ের জগৎটা একটু অন্ধকার জগত বললেই চলে। কারণ এ সকল শিশু-কিশোরদেরকে এমন ভাবেই পরিচালনা করে থাকেন নেতারা যাতে করে তারা যেকোন ধরনের অপকর্ম সম্পাদন করতে পারে। তাদের ভিতরে কোন মায়া দয়া থাকে না যে কোন মুহূর্তে যাকে তাকে হামলা এবং মেরে ফেলার মত ঘটনা ঘটানো তাদের কাছে মুহূর্তের ব্যাপার। তাই শিশু কিশোরদের অপরাধ থেকে থেকে বের করে আনার জন্য প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে পরিবার কে। তার ছেলে কি করছে কোথায় যাচ্ছে কার সাথে চলাফেরা করছে এ বিষয়ে রাখতে হবে সঠিক তদাদকি। এক্ষেত্রে পরিবারকে তাদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে তাদের সাথে বন্ধুর মতো মিশতে হবে। তাহলে এ সকল শিশু-কিশোরদের অন্ধকার জগত থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব । না হলে একটা সময় ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে দেশ ও সমাজ।
বর্তমানে আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানা এলাকায় যে কিশোর গ্যাং তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে তা বন্ধে প্রশাসনের নেই কোন জোরালো ভুমিকা এমনটা মনে করছেন এলাকাবাসী। এ দুটি থানা এলাকার বিভিন্ন অলি গলি এখন রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দখলে দিনে দুপুরে চলছে মারামারি হানাহানি চুরি ছিনতাই সহ নানা ধরনের অপকর্ম। পাশাপাশি মাদক বাণিজ্য ও মাদক সেবনের আশ্রমে রূপান্তরিত হয়েছে উক্ত আকবর শাহ ও পাহাড়তলী থানা এলাকা দুটি। কিশোর গ্যাং তৎপরতা বন্ধে প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকায় বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। এসব কিশোর গ্যাং সদস্যদের বাধা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই এলাকাবাসীর বাধা দিতে গেলেই নানা রকম বিলম্বনার মুখে পড়তে হয় তাদের। বিগত সময়ে কিশোর কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অনেক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উক্ত এলাকা গুলোতে তার মধ্যে সম্প্রতি সময়ে চিকিৎসক কোরবান আলী হত্যাকান্ড উল্লেখযোগ্য। সুতরাং আর কোন কোরবান আলী যেনো এ সকল কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অপমৃত্যুর স্বীকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রশাসনকে জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।