২০২৯ সালের পরে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে কি না সেটা নিয়ে ভাবতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি।
তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। ২০১২-১৩ সালে বলেছিলাম, ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। এতো তাড়াতাড়ি দেইখেন না। ২০২৯ সালের পরে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে কি না সেটা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, ভাবেন। ২০২৯ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। জনগণ যতদিন চায়, শেখ হাসিনার শারীরিক সক্ষমতা যতদিন থাকবে ততদিন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনগণের পক্ষে কাজ করে যাবেন।’
আজ শনিবার মাগুরা ওয়াপদা মোড়-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়ক ও লাঙ্গলবাধ টু পাংশা ব্রিজের কাজ পরিদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জনসভার আয়োজন করে বগুড়ার শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ।
হানিফ বলেন, ‘আপনারা কার নেতৃত্বে ক্ষমতায় যেতে চান। আপনাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে কারাগারে আছেন। আর আরেকজন হাওয়া ভবন বানিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। দুর্নীতিবাজ, দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। কাকে নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন? দেশের মানুষের কি আর কাজ নেই যে, একজন সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজকে ক্ষমতায় বসাবে।’
তিনি বলেন, ‘২০১২ সালে যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হয় তখন বিএনপি এবং জামায়াত মিলে সরকার পতনের আন্দোলনে শুরু করেছিল। তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ঘোষিত হলো। সাংবাদিক জিজ্ঞেস করেছিলেন, কবে থেকে চূড়ান্ত আন্দোলন হবে। জবাবে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ঈদের পরে আন্দোলন চূড়ান্ত হবে। আজকে ২০২৩ সাল। বহু ঈদ চলে গেছে। বহু আন্দোলন দেখেছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার এখনো আছে।’
হানিফ বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কারণ, বিএনপি নেত্রী ক্ষমতায় থাকতে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। যিনি এতিমের টাকার লোভ সামলাতে পারেন না জনগণ তার ডাকে আন্দোলন করতে যাবে? বাংলার জনমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সফল হয়নি। আন্দোলন করতে করতে খালেদা জিয়া আজ কারাগারে।’
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইদানীং কিছু কিছু বিএনপি নেতা ও ছোট ছোট কয়েকটি দল লাফালাফি করে বক্তব্য দিচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন বিদেশি প্রভুরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। এ বাংলার গ্রামে গঞ্জের মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে আছে। দেশের মানুষ উন্নয়ন, শান্তি চায়। কোনো দুর্বৃত্তের পক্ষে থাকতে পারে না।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, ‘লাফালাফি বন্ধ করে নির্বাচনে আসুন। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন।’
‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছেন। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন। তখন কোথায় ছিল গণতন্ত্র, কোথায় ছিল মানবাধিকার? আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর পাশবিক নির্যাতনের কথা ভুলে গেছেন? আজ মায়াকান্না করেন।’
হানিফ বলেন, ‘দেশের মানুষ সন্ত্রাস চায় না, উন্নয়ন শান্তি চায়। যারা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। এই বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য প্রতিরোধ করে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।’
তিনি বলেন, ‘এদেশের ক্ষমতার মালিক হলো জনগণ। আর এই জনগণই আমাদের আওয়ামী লীগের শক্তি। জনগণ যখন শেখ হাসিনার পাশে আছে এমন কোনো শক্তি নেই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে। আর বিদেশি প্রভুরা, এরা আপনাদের ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। ষড়যন্ত্র করে লাফালাফি করতে পারেন, কিন্তু এতে লাভ হবে না।’
জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই, রাজবাড়ী -২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ প্রমুখ।
এছাড়া জনসভায় মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এবং মাগুরা, ঝিনাইদহ ও রাজবাড়ী জেলার সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।