নৈশপ্রহরীকে মারধর করা বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমর কুমার পালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব কানিজ ফাতেমার সই করা এক প্রজ্ঞাপনে জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, সমর কুমার পালকে ঢাকার বিআরটিএ কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি করা হয়েছে। জানা গেছে, সিনিয়র সহকারী সচিব সমর কুমার পাল ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন।
এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে ফাইল আটকে ঘুষ গ্রহণ, পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ, স্বেচ্ছাচারিতা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবজ্ঞাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে সময়মতো অফিসে না আসা ও সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে গভীর রাত পর্যন্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসে থাকতে বাধ্য এবং যখন-তখন চেয়ারম্যানদের বিনা প্রয়োজনে তার কার্যালয়ে ডাকার অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইউএনও সমর কুমার পাল উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী আলমগীর শেখকে অজ্ঞাত কারণে আনসার দিয়ে ধরে তার কার্যালয়ে এনে মারধর করেন।
এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে সাবেক জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক এডিএম সালাহ্উদ্দিন আহমেদকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও ১১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা ইউএনও সমর পালকে বয়কট করেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও প্রত্যাহার করতে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম আলী বেগ এ ব্যাপারে তদন্ত করেন। গত তিন মাস ধরে জনপ্রতিনিধিরা তাকে বয়কট করেছেন এবং পরিষদের সকল কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে রেখেছেন। এতে সদর উপজেলা পরিষদ ও ১১টি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ব্যাহত এবং বেতনভাতা বন্ধ থাকায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। এরপরও ইউএনও বহাল তবিয়তে ছিলেন। বগুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে জানান, তাদের আন্দোলনের কারণে ইউএনও সমর কুমার পালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।